কোচবিহার পুরসভার নির্বাচনের দিন উজ্জ্বল তর এবং মীনা তর। —নিজস্ব চিত্র।
পুরভোটের পর প্রায় এক মাস গড়িয়ে গেলেও মা-ছেলের ‘যুদ্ধ’ অব্যাহত। কোচবিহার পুরসভার নির্বাচনী ময়দানে যুযুধান ছিলেন মা মীনা তর এবং ছেলে উজ্জ্বল তর। সেই ভোটযুদ্ধে মাকে হারিয়ে ছেলের জয়ের পরেও দু’পক্ষ যেন ‘রণক্লান্ত’ হয়নি। কাউন্সিলর হওয়ার পর এলাকাবাসী ও কর্মীদের জন্য ছেলের ভোজের আয়োজনকে নিজের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান বলে তকমা দিয়েছেন মা। এমনকি, ঘটা করে সে কথা নেটমাধ্যমেও জানিয়েছেন তিনি। একে কেন্দ্র করে তৃণমূলের প্রাক্তন বনাম বর্তমান কাউন্সিলর তথা মা-ছেলের যুদ্ধে আপাতত সরগরম কোচবিহারের রাজনৈতিক আঙিনা।
বুধবার ফেসবুকে মীনা লিখেছেন, ‘আগামী ২৭ মার্চ রবিবার আমার বড় ছেলে উজ্জ্বল তর ও মেজ ছেলে উৎপল তর আমার শ্রাদ্ধের আয়োজন করেছে। আমি আমার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সুধী নাগরিকবৃন্দের কাছে আবেদন করছি, আপনারা এসে আমার আত্মার শান্তি কামনা করে যাবেন।’
প্রসঙ্গত, সদ্যসমাপ্ত পুরনির্বাচনে কোচবিহারের ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিই তৃণমূলের দখলে এসেছে। বাকি ৩টিতে জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা এবং ২টি ওয়ার্ড নিজেদের দখলে রেখেছে বামেরা। তবে ২০টির মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ডের দিকেই নজর ছিল প্রায় সকলের। কারণ ওই ওয়ার্ডে লড়াই ছিল মা এবং ছেলের।
তৃণমূলের প্রার্থিতালিকায় ঘোষণার পর দেখা গিয়েছিল, তাতে নাম ছিল না ছেলে উজ্জ্বলের। কিন্তু, নাম ছিল মা মীনার। ফলে জেলা সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে তৃণমূলের প্রতীক ছেড়ে নির্দল হিসাবে ওই ওয়ার্ডে দাঁড়ান উজ্জ্বল। নির্বাচনের ফল বার হতে দেখা যায়, ৬১১ ভোটে মীনাকে পরাজিত করেছেন তিনি। তবে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও বোর্ড গঠনের পর চেয়ারম্যান পদে তৃণমূলের রবীন্দ্রনাথ ঘোষকেই সমর্থন করেছিলেন উজ্জ্বল-সহ তিন বিক্ষুব্ধ নির্দল। তবে তাতে পরিবারিক সম্পর্কে ফাটল আটকানো যায়নি বলে দাবি।
কাউন্সিলর হওয়ার পর আগামী ২৭ মার্চ এলাকার নাগরিক ও ভোটের কাজে সাহায্য করা কর্মীদের নিয়ে একটি ভোজের আয়োজন করেছেন উজ্জ্বল। সেই অনুষ্ঠান ঘিরে মা-ছেলের মধ্যে এ বার তরজা শুরু হয়েছে। মীনার দাবি, ‘‘আমাকে পরাজিত করেও ছেলের মন ভরেনি। এলাকায় প্রচার করে বেড়াচ্ছে সে। আগামী ২৭ তারিখ আমার শ্রাদ্ধের আয়োজন করেছে। সে কারণেই আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট করেছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি জীবিত অবস্থায় একে প্রাধান্য দিয়ে গেলাম। কারণ মৃত্যুর পর আমার দেহ ছেলে স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারবে না। প্রয়োজনে আমি ওকে ত্যাজ্যপুত্র করব।’’
মায়ের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এর নিন্দা করেছেন উজ্জ্বল। তিনি বলেন, ‘‘তিনি (মীনা) যা করেছেন সেটা খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। যে ভাবে নাগরিকদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন, তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে ২৭ তারিখ। ওয়ার্ডের নাগরিকরা সেই নির্বাচনের দিনে এর উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। তাঁর এই পোস্টটি এই ওয়ার্ডের নাগরিকদের অসম্মানিত করেছে। কারণ ওয়ার্ডের নাগরিকেরা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। সেই নাগরিক এবং আমার কর্মীদের নিয়ে ২৭ তারিখ গেটটুগেদারের আয়োজন করেছি। এই অনুষ্ঠানকে যদি নিজের শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান মনে করেন, তা হলে এটা তাঁর বিষয়।’’
যদিও নেটমাধ্যমে যে পোস্টটি ঘিরে মা-ছেলের তরজা চলছে, তা পরে সরিয়ে দেন মীনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy