Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

তেষ্টার জল পেতে বালি খুঁড়ে অপেক্ষা

রনজিৎ কুর্মি জানালেন, ‘‘সাত দিন ধরে এলাকায় জল নেই। বার বার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জানিয়েও জলের স্থায়ী ব্যবস্থা হচ্ছে না। অস্থায়ী ভাবে পাইপলাইন বসালেও বারবারই তা এ ভাবে জলের তোড়ে উড়ে যায়।’’

সংগ্রাম: নদীর বালি খুঁড়ে জলের জন্য অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

সংগ্রাম: নদীর বালি খুঁড়ে জলের জন্য অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

নারায়ণ দে
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০৮:৫০
Share: Save:

এ যেন একেবারে আদিম যুগে ফিরে যাওয়া। তেষ্টার জলটুকু পেতে নদীর চরে বালি খুঁড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। এই ছবি আলিপুরদুয়ারের জয়ন্তীর। সাত দিন আগে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে জয়ন্তী এলাকার জলের পাইপ লাইন। কবে তা ঠিক হবে তা জানেন না জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তারা। তাই শরীর খারাপের ঝুঁকি নিয়েও নদীর জল খেয়েই দিন কাটছে নিরুপায় বাসিন্দাদের।

বুধবার জয়ন্তী নদীতে গিয়ে দেখা গেল মহিল-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সকলেই জলের বোতল, বালতি, ডেকচি নিয়ে বসে রয়েছেন নদীর ধারে। নদীর জল বেশ ঘোলা। বাসিন্দারা বালি খুঁড়ে ছোট ছোট গর্ত তৈরি করছেন। সেখানে নদীর তলা থেকে অপেক্ষাকৃত পরিস্কার জল উঠছে খুব ধীরে ধীরে। সেই জল ছোট পাত্র দিয়ে বড় পাত্রতে সংগ্রহ করছেন এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা। রনজিৎ কুর্মি জানালেন, ‘‘সাত দিন ধরে এলাকায় জল নেই। বার বার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জানিয়েও জলের স্থায়ী ব্যবস্থা হচ্ছে না। অস্থায়ী ভাবে পাইপলাইন বসালেও বারবারই তা এ ভাবে জলের তোড়ে উড়ে যায়।’’

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর অবশ্য সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে। দফতরের সহকারী বাস্তুকার আশিষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জয়ন্তী বনবস্তি এলাকায় গত সাত দিন ধরে জল সরবরাহ বন্ধ। কবে তা ঠিক হবে তা নদীর জল না কমলে বলে সম্ভব নয়।’’ আলিপুরদুয়ার জেলাপরিষদের সভাধিপতি মোহন শর্মার দাবি, ‘‘বিষয়টি কেউ নজরে আনেনি। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।’’

তবে আপাতত তেষ্টার জন্য নদীর জলই ভরসা। এলাকার বাসিন্দা কোয়েল লামা বলেন, ‘‘প্রতিদিন বাড়ি থেকে এসে নদীতে বালি খুঁড়ে, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। পরে তা ফুটিয়ে খেতে হচ্ছে।’’ ইজরাইল খানের কথায়, ‘‘মনে হচ্ছে আদিম যুগে আছি।’’ সমস্যায় সরকারি দফতরও। বিট অফিসার রফিক আলি জানালেন, ‘‘জলের প্রচণ্ড সমস্যা। আলিপুরদুয়ার থেকে পানীয় জল কিনতে হচ্ছে। প্রতিদিনের ব্যবহারের জল নদীত থেকে ট্যাঙ্কারে ভরে পাম্প দিয়ে ফরেস্টের ট্যাঙ্কে তুলে রাখতে হচ্ছে। কবে সমস্যা মিটবে বুঝতে পারছি না।’’ স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জীব রায়, রামদেও হাজরাদের ক্ষোভ, ‘‘প্রতি বছর এক সমস্যা। স্থায়ী সমাধানে কেন ব্যবস্থা হচ্ছে না বুঝতে পারছি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Flood Thirsty water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy