গণরোষ: বেঁধে রাখা হয়েছে এক অভিযুক্তকে। নিজস্ব চিত্র
চোর সন্দেহে তিন যুবককে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে গণপিটুনির অভিযোগ এ বার জলপাইগুড়ি শহরেই। পাণ্ডাপাড়া কালীবাড়ি লাগোয়া পোড়াপাড়ার কয়েক জন বাসিন্দা বৃহস্পতিবার ভোর তিনটে নাগাদ চোর সন্দেহে তিন যুবককে ধরেন। তাঁদের অভিযোগ, জনা পাঁচেক যুবক একটি দোকানের তালা ভাঙার চেষ্টা করছিল। বাসিন্দারা তাড়া করলে দু’জন পালিয়ে যায়, তিন জন ধরা পড়ে বলে দাবি। ‘চোর ধরা পড়েছে’ খবর পেয়ে ভিড় বাড়তে থাকে। প্রতক্ষ্যদর্শীদের দাবি, তখন ভিড়ের মধ্যেই মুখে মুখে ঠিক হয়, পুলিশে খবর দেওয়া হবে না, শাস্তি যা দেওয়ার বাসিন্দারাই দেবেন। সঙ্গে সঙ্গে তিন জনকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গণপ্রহার শুরু হয়। সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ পুলিশ গিয়ে তিন যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
বুধবার জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া জয়পুর চা বাগানে ছেলেধরা সন্দেহে এক প্রৌঢ় এবং শান্তিপাড়ায় চোর সন্দেহে এক নাবালক জনতার বিচারের শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবারও একই অভিযোগ ওঠায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। পুলিশ তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে। মার খেয়ে তাঁদের শরীরে কালসিটে পড়ে গিয়েছে। মুখ দিয়ে রক্তপাত হয়েছে এক জনের। তবে কারও অবস্থাই আশঙ্কাজনক নয় বলে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশেরও দাবি, ধৃতদের সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল। সকলেই চুরির মতলবেই জড়ো হয়েছিল বলে দাবি। তবে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে গণপিটুনি চললেও পুলিশ জানতে পারল না কেন, সে প্রশ্নও উঠেছে। জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী পুরো ঘটনাটি নিয়েই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পোড়াপাড়ার বাসিন্দাদের দাবি, ভোর রাতে কয়েক জন যুবকের গলা শুনতে পান এক দম্পতি। দরজা ভাঙার শব্দও শোনা যায় বলে দাবি। ওই দম্পতি আশেপাশের সকলকে খবর দেন। মুদি ব্যবসায়ী উৎপল সরকারের দাবি, “আমার দোকানে চুরির চেষ্টা হয়েছিল। দরজা প্রায় ভেঙেই ফেলেছিল।” পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতেরা কেউ কাপড়ের দোকানে কাজ করে, কেউ বা গ্যারাজে।
‘চোর’ ধরে পুলিশে কেন খবর দেওয়া হল না? প্রতক্ষ্যদর্শী কাঞ্চন রায় বলেন, “প্রচুর লোক জমে গিয়েছিল। সকলেই খুব খেপে ছিল মনে হল। সকলে মিলেই ওদের বেঁধে রাখতে বলল।” শিক্ষক রণজিত বর্মণের কথায়, “কেউ অপরাধ করলে বা কোনও সন্দেহভাজনকে রাতারাতি জনতাই বিচার করে শাস্তি দিচ্ছে, এমন চলতে থাকলে অস্থিরতা তৈরি হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy