Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Violence

বন্‌ধ-ভর গোলমাল

কোতোয়ালি থানার ঘুঘুমারিতে ঘণ্টা তিনেক এমন চলতে থাকে। বেলা ন’টা নাগাদ ‘অ্যাকশনে’ নামে পুলিশ। শুরু হয় লাঠিচার্জ।

তাণ্ডব: বাস ভাঙচুর কোচবিহারে। ইনসেটে, জখম সরকারি বাসের কর্মী। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

তাণ্ডব: বাস ভাঙচুর কোচবিহারে। ইনসেটে, জখম সরকারি বাসের কর্মী। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০২:১০
Share: Save:

তখন সবে সকাল হয়েছে। এক-দু’জন করে বন্‌ধ সমর্থনকারী জমা হতে শুরু করেছেন রাস্তার মোড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে জটলা তৈরি হল। শুরু হল স্লোগান। কয়েকজন পুলিশ কর্মী দাঁড়িয়ে ছিলেন পাশে। তার মধ্যেই শুরু হয়ে যায় অবরোধ। গাড়ি আটকানোর পালা। এর পর পুলিশের বড় বাহিনী পৌঁছে যায় সেখানে। পৌঁছোন কোতোয়ালি থানার আইসি সৌম্যজিৎ রায়, ডিএসপি ট্রাফিক চন্দন দাস। দহায় দফায় বন্‌ধ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। কাজ হয় না। এর মধ্যেই শুরু হয়ে যায় গাড়ি ভাঙচুর। অবরোধের জায়গা থেকে পঞ্চাশ মিটার দূরত্বে ভেঙে দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের গাড়ি।

কোতোয়ালি থানার ঘুঘুমারিতে ঘণ্টা তিনেক এমন চলতে থাকে। বেলা ন’টা নাগাদ ‘অ্যাকশনে’ নামে পুলিশ। শুরু হয় লাঠিচার্জ। নিমেষেই অবরোধ ছেড়ে দৌড় শুরু করেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা। তাঁদের পিছু লাঠি উঁচিয়ে ধাওয়া করে পুলিশ। বিজেপি সমর্থকরাও পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ। ২০ জনের বেশি আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকেই পুলিশ বাহিনীর একটি অংশ চলে যায় কোচবিহার ১ নম্বর বিডিও অফিসের সামনে।

ঘুঘুমারি মোড় থেকে দুশো মিটারের মধ্যেই ওই জায়গা। সেখানেও পিকেটিং ছিল বন্‌ধ সমর্থনকারীদের। সেখানেও শুরু হয় লাঠিচার্জ। নিমেষেই ফাঁকা হয়ে যায় চত্বর। বন্‌ধ রুখতে এমনই তৎপর ছিল কোচবিহার পুলিশ।

কিছুক্ষণ চুপ থাকার পরে ফের ঘুঘুমারি থেকে খানিক দূরে জামতলায় গাড়ি আটকাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা। সেখানেও পৌঁছে যায় পুলিশ। শুরু হয় লাঠিচার্জ। বন্‌ধ আন্দোলনকারীরা পাল্টা বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করলে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। এ সবের মধ্যেই অভিযোগ ওঠে, মোটরবাইকে চেপে কিছু বিজেপি কর্মী ঢিল ছুড়ে বাস ও গাড়ি ভাঙচুর করছে। ধলুয়াবাড়িতে ঢিলের আঘাতে এক বাস চালক এবং এক যাত্রী জখম হন। এর পরেই শুরু হয়ে যায় মোটরবাইকে চাপা কর্মীদের পিছু-ধাওয়া। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। সবমিলিয়ে কোতোয়ালি থানা এলাকাতেই ৬৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “প্রয়োজন মতো সব জায়গায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা অভিযোগ করেন, পুলিশ এ দিন অতি-তৎপর ছিল। তিনি বলেন, “বিজেপি শান্তিপূর্ণ্ ভাবেই বন্‌ধ-এর সমর্থনে প্রচারে নেমেছিল। পুলিশ দিয়ে তৃণমূল সরকার বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছে। তাতে আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী জখম হয়েছেন।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা অশান্তি তৈরি করেন। পুলিশ আইন মেনে ব্যবস্থা নিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Violence BJP Strike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE