গ্রামের এই মণ্ডপেই চলে উৎসবের আয়োজন। — নিজস্ব চিত্র।
আট দশক আগে গ্রামের সার্বিক স্বাস্থ্য ফেরাতে হয়েছিল ধনলক্ষ্মী পুজো। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, তার পর থেকে নাকি একটু একটু করে হাল ফিরেছে গাঁয়ের। কলি ফিরেছে গ্রামবাসীদের আর্থিক স্বাস্থ্যেরও। ফলে বছর বছর আশ্বিন সংক্রান্তি তিথিতে ধনলক্ষ্মীর পুজোর জাঁকজমকও বেড়েছে দিন দিন। সেই পুজোর আজ এমনই বহর যে, বাঙালির শ্রেষ্ঠ পার্বণ দুর্গাপুজোর জৌলুসও ম্লান। এ বার ধনলক্ষ্মীর পুজো পড়েছে দুর্গাপুজোর সঙ্গেই। ফলে, দ্বিগুণ আনন্দে মেতে উঠতে তৈরি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বোয়ালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের সরন গ্রাম।
সেই পুজোই এখন গ্রামের সর্বজনীন পূজা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রতি বার আশ্বিন মাসের সংক্রান্তি তিথিতে পুজোর আয়োজন করা হয়। ফলে আলাদা করে দুর্গাপুজোর প্রচলন নেই। ধনলক্ষ্মী পুজোকেই পাঁচ দিনের পুজো হিসাবে উদ্যাপন করেন গ্রামের মানুষ। গ্রামের বাসিন্দারা পূজার ক’দিন একসঙ্গে পংক্তিভোজনে মিলিত হন। এ ছাড়াও থাকে নিত্যদিন পুজো ও ভোগের ব্যবস্থা। প্রতি রাতে লক্ষ্মী-মঙ্গল গান। তা ছাড়া বসে গ্রামীণ বিভিন্ন লোক সঙ্গীতের আসর। লৌকিক এই দেবীর গড়নও বিচিত্র। নাম ধনলক্ষ্মী হলেও, রাম, লক্ষ্মণ, সীতার মূর্তি আর মূল মূর্তির দু’পাশে লব, কুশ এবং হনুমান প্রতিমা রূপে পূজিত হন।
বুধবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া উৎসব চলবে রবিবার পর্যন্ত। বুধবার বিকেলে গ্রামের মহিলারা পূর্ণ ঘট অর্থাৎ চাল ভর্তি ঘট নিয়ে আসেন মূল পুজোমণ্ডপে। সেখানে ওই চাল জমা দিয়ে শূন্য ঘট নিয়ে যান নদীতে। ঘট ভর্তি করে নিয়ে এসে দেবীর আবাহন শুরু হবে। এটাই রীতি। রবিবার দুপুরে পুজো শেষ। সেই দিন গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে পংক্তি ভোজন করবেন।
এই পুজোর সঙ্গে জড়িত এক গ্রামবাসী উত্তম বর্মন। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা, কাকাদের মুখে শুনেছি, একটা সময় এই গ্রামের মানুষ খুবই দরিদ্র ছিলেন। ধনলক্ষ্মী পুজো শুরু হওয়ার পর থেকেই দারিদ্র ঘুচতে শুরু করে। তাই ধনলক্ষ্মীকে প্রধান দেবী হিসাবে গ্রামে পুজোর চল হয়ে গিয়েছে। বছরে এই ক’টা দিন গ্রামের সকলের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হয়। খুবই ভাল লাগে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy