রণক্ষেত্র: কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে পুলিশ। কালিয়াচকের সুজাপুরে। ছবি: অভিজিৎ সাহা
বন্ধের দিন জাতীয় সড়কে অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশই ছোট গাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠল মালদহের সুজাপুরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, দুপুরে পুলিশ ও র্যাফের পোশাক পরা কয়েক জন কয়েকটি বেসরকারি ছোট গাড়ি ভাঙচুর করছে। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, ভিডিয়ো ফুটেজটি দূর থেকে তোলা বলে যারা গোলমাল করছে, তাদের মুখ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না। তবে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে।
তবে উত্তর ও দক্ষিণ জেলায় বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নেই শেষ হল বন্ধ। গৌড়বঙ্গের তিন জেলাতেই বন্ধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বলে দাবি করেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বন্ধ পালন করেছেন সাধারণ মানুষ। আবার, বন্ধে কোনও প্রভাব পড়েনি বলে পাল্টা দাবি বিজেপি ও তৃণমূলের।
সুজাপুর এ দিন সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়িতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যৌথ ভাবে মিছিল করেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। অভিযোগ, সেই সময় ফরাক্কাগামী সরকারি বাস ও অটো রিকশা ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের সামনেই ওই হামলা হয় বলেও অভিযোগ। এরই মধ্যে গাজলে বন্ধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয় বলে অভিযোগ।
কিন্তু সুজাপুর রণক্ষেত্রে পরিণত হয় দুপুরে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি হোটেল, সরকারি ও বেসরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এক পুলিশ আধিকারিকের সার্ভিস রিভলভার ছিনতাইয়ের অভিযোগও ওঠে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রবার বুলেট ছোড়ে। জেলা পুলিশের কয়েক জন আধিকারিক ও কর্মীও ইটবৃষ্টিতে আহত হন। বন্ধ সমর্থকদের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশও ইট ছুড়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘সমস্ত ঘটনায় জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মালদহে পণ্যবাহী ট্রাক, সরকারি বাস চলাচল করলেও বেসরকারি বাস রাস্তায় দেখা যায়নি। দোকান-বাজার বন্ধ ছিল। সরকারি অফিসে হাজিরা স্বাভাবিক থাকলেও স্কুল-কলেজে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কম ছিল। চাঁচল মহকুমার দোকান-বাজার বন্ধ ছিল। ব্যাঙ্ক খোলেনি। চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘বন্ধে কোথাও অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।’’
উত্তর দিনাজপুরের বারোদুয়ারি এবং দেহশ্রী এলাকায় দু’টি বাসে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বন্ধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রাস্তা অবরোধ হয় কালিয়াগঞ্জ, ইসলামপুরেও। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট এবং গঙ্গারামপুরে জোর করে গাড়ি আটকানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গঙ্গারামপুর থেকে পাঁচ জন এবং বালুরঘাট থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে করা হয়। আরএসপির রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, ‘‘বন্ধে ভাল সাড়া মিলেছে।” সেই সুরেই প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরীও বলেন, ‘‘শুধু পুলিশের জন্য মালদহে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে।” মন্ত্রী গোলাম রাব্বানি বলেন, ‘‘বন্ধ করে মানুষকে হয়রানি করছে কংগ্রেস ও বামেরা।’’ তবে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘কংগ্রেস, বামেরা প্রকাশ্যে বন্ধ করেছে। আর আড়াল থেকে মদত দিয়েছে তৃণমূল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy