Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

তেজসের সম্ভাবনায় বিতর্কও

এত দিন পর্যন্ত এই অঞ্চলে শতাব্দীর মতো দ্রুতগামী ট্রেন চলত। তেজসকে শতাব্দীরই আধুনিক সংস্করণ বলা হচ্ছে।

তেজস এক্সপ্রেস

তেজস এক্সপ্রেস

শান্তশ্রী মজুমদার
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩১
Share: Save:

তেজস এক্সপ্রেসকে সদ্য কয়েক মাস আগে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে ট্রেনের পরিষেবা যথেষ্ট দামি। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল এমনই তিনটি তেজস এক্সপ্রেস পেতে পারে বলে আলোচনা শুরু হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। রেল সূত্রে খবর, শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট বক্তৃতার পরে সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই জানাচ্ছেন রেল কর্তারা। রেলের পড়ে থাকা জমিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাবও রয়েছে। রেল বাজেটের ক্ষেত্রে যে প্রত্যাশা উত্তরবঙ্গের জন্য ছিল, তা কতটা পূরণ হবে, তা নিয়েই চিন্তিত এলাকাবাসী। বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ দীর্ঘদিন থেকেই রেল ইউনিয়নগুলি করে আসছিল। এর মধ্যে চারটি স্টেশনের ব্যবস্থাপনা বেসরকারি হাতে দেওয়ার প্রস্তাবেও প্রতিবাদ উঠতে শুরু করেছে।

এত দিন পর্যন্ত এই অঞ্চলে শতাব্দীর মতো দ্রুতগামী ট্রেন চলত। তেজসকে শতাব্দীরই আধুনিক সংস্করণ বলা হচ্ছে। এই সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করলেন না ওই রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ। তিনি বলেন, ‘‘এখন শতাব্দী মানের ট্রেনই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সবচেয়ে গতিময় ট্রেন। তেজসের তালিকা দু’একদিনে তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করছি। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে যে ট্রেনগুলি চালানোর কথা, তার তিনটি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল পেতে পারে।’’

তেজস পেলে উত্তরবঙ্গের পর্যটন এবং উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যোগাযোগ ভাল হওয়ারও সম্ভাবনা বলে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল থেকেই। ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে চলা তেজসে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য শতাব্দীর চেয়ে বেশি। যাত্রীদের ব্যক্তিগত বিমা রয়েছে। অবশ্য ভাড়াও প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। তবে তেজস নিয়ে নানা অভিযোগও রয়েছে। এই ট্রেনের খাবার নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ তুলেছে যাত্রীদের একটি অংশ। উত্তরবঙ্গে যে লাইন এবং আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো রয়েছে রেলের, তা এই ট্রেন চালানোর উপযোগী কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘তেজস চালানোর নামে রেলের বেসরকারিকরণ হচ্ছে। তা ছাড়া এই ট্রেন আদৌ এখানে চলবে কিনা, বা পর্যটনের কিছু সুবিধা হবে কিনা, সেটা চালু না হলে বলা সম্ভব নয়।’’ প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাসের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘তেজস বেসরকারি হাতে দিয়ে চালানো হচ্ছে। প্রচুর টাকা ভাড়া। উত্তরবঙ্গে ব্যবসার সার্বিক কোনও উন্নতি বাজেটে দেখছি না। তেজস চালু হচ্ছে কিনা, কী ভাবে চলছে, এসব দেখেই বলা সম্ভব।’’

রেলের নতুন প্রকল্পের তুলনায় বরং পড়ে থাকা প্রকল্পগুলি শেষ করার দাবি তুলেছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, শতাব্দী সময়ে চলে না। তাই তেজসও কতটা কার্যকর হবে, সেটা বলা কঠিন। বেসরকারি ট্রেন এবং স্টেশনের ব্যবস্থাপনা বেসরকারি হাতে দেওয়ার প্রতিবাদে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের এনজেপির শাখা সম্পাদক রণজয় চন্দ বলেন, ‘‘বাজেটের ছত্রে ছত্রে বেসরকারিকরণের কথা বলা হয়েছে রেলের ক্ষেত্রে। এর বিরুদ্ধে ফের আন্দোলনের রাস্তা নেব আমরা।’’

রেলের ফাঁকা জমিতে যে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী দিয়েছেন, তা উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জমিতেও হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কর্তারা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy