চড়া রোদের তাপে পুড়ছে আম-লিচুর বাগান। বোঁটা শুকিয়ে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আম। চৈত্রের প্রথম থেকেই দাবদাহের কবলে মালদহের আম-লিচু। জমিতে শুকোচ্ছে পটলের মতো একাধিক আনাজও। সব মিলিয়ে গরমে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন জেলার কৃষকেরা। আশঙ্কা, এমন আবহাওয়া চলতে থাকলে বড় রকমের ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে। তবে, কড়া রোদ নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও কৃষকদের হাল না ছেড়ে দিয়ে গাছের পরিচর্যায় মনোনিবেশ করার পরামর্শ দিচ্ছে জেলার উদ্যান পালন দফতর।
কৃষি দফতরের আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। আগামী এক সপ্তাহে তাপমাত্রার পারদ আরও চড়বে এবং গরম হাওয়াও বইতে পারে। এরই মধ্যে রোদের তাপে বোঁটা শুকিয়ে জেলার বাগানগুলিতে ঝরে পড়ছে আম। মালদহের উদ্যান পালন দফতরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক বলেন, ‘‘টানা চড়া রোদ থাকলে আম-লিচু বা আনাজ চাষে সমস্যা হতে পারে ঠিকই। তবে কৃষকদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই। এমন আবহাওয়ায় সকালে বা বিকেলের পরে গাছে নিয়মিত জল ‘স্প্রে’ করতে হবে। গাছের গোড়াতেও জল দেওয়া যেতে পারে। একই ভাবে, আনাজ চাষের ক্ষেত্রেও কৃষকদের নির্দিষ্ট পরামর্শ মেনে চলতে হবে।’’
উদ্যান পালন দফতর জানিয়েছে, এ বার জেলায় ৯০ শতাংশেরও বেশি আমগাছে মুকুল এসেছে। তবে এ বার মুকুল আসতে সময় গড়িয়েছে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে। মার্চের শেষে কোনও গাছে মটরদানা, কোনও গাছে কুলের আকৃতি নিয়েছে মুকুল। আশঙ্কা, টানা রোদের তাপ চললে প্রচুর আম ঝরে যেতে পারে। আমের মতো লিচু চাষ নিয়েও চিন্তায় জেলার কৃষকেরা। কারণ, আবহাওয়ার কারণে এ বার মাত্র ৭৫ শতাংশ গাছে লিচুর মুকুল ধরেছে। রোদের তাপে সে মুকুলও ঝরে পড়ছে।
মিল্কির আমচাষি সইফুদ্দিন মিয়াঁ বলেন, ‘‘আমের মুকুল ভাল হওয়ায় ফলন নিয়ে এ বার আশা করছিলাম। কিন্তু এখন এই চড়া রোদে অনেক আম ঝরে পড়ছে। সামনে ঝড়-বৃষ্টির মরসুমও রয়েছে। সে সময়ও ক্ষতি হবে। কাজেই, আমে এ বার লাভের মুখ দেখতে পাব কি না, জানি না।’’ মালদহের আম ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘আম, লিচু এবং আনাজ চাষিরা প্রচণ্ড রোদ নিয়ে চিন্তায় আছেন। তাঁদের পাশে সংগঠন রয়েছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)