বিক্ষোভে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রেলের মত গণপরিষেবা।—ফাইল চিত্র।
তাহলে কি নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা হওয়ায় পাল্টা চাপ তৈরি করতে উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণের রেল যোগাযোগ ছিন্ন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার? এই প্রশ্ন এখন উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যেই। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, যে ভাবে রেলের সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছিল, তাতে ট্রেন বাতিল না করে উপায় ছিল না।
তৃণমূল নেতাদের দাবি, এক দিকে দক্ষিণের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ। অন্য দিকে, অসমের সঙ্গে যোগাযোগ এখনও পুরোপুরি ঠিক হয়নি। ফলে অন্য রাজ্য থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনা-নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। দক্ষিণবঙ্গ থেকে বা হয়ে যে সব পণ্য উত্তরে আসত, তা-ও এখন বাধা পাচ্ছে। ফলে দাম বাড়ছে সব কিছুর। বিশেষ করে রেলের মতো ‘লাইফলাইন’ ছিন্ন করে দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন তাঁরা।
শাসক দলের নেতারা জানাচ্ছেন, মালদহের ভালুকায় রেললাইন সোমবার মাঝরাতে অনেকটাই ঠিকঠাক হয়েছে। বাকি পরিকাঠামো ঠিকঠাক করার কাজ চলছে। কিন্তু পরিদর্শন বা লাইন চালু নিয়ে কোনও আশ্বাস রেল দিচ্ছে না। যাত্রী নিরাপত্তার প্রশ্ন দেখিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে পরিষেবা। তাঁদের মতে, পুরোটাই রাজনৈতিক চক্রান্ত। দলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী গৌতম দেবের অভিযোগ, ‘‘সব কৃত্রিমভাবে তৈরি করা সমস্যা। লোক দিয়ে গোলমাল পাকিয়ে ট্রেন পরিষেবা বিপর্যস্ত, বিচ্ছিন্ন করানো হয়েছে।’’
মন্ত্রী জানান, ‘‘আমরা সর্বস্তরের, সর্বধর্মের মানুষকে শান্ত থাকতে বলছি। বলেছি, আমরা থাকতে কারও কোনও ভয় নেই। আর এ সব বুঝে গেরুয়া বাহিনী পরিকল্পিতভাবে সমস্যা, জটিলতা এবং গোলমাল তৈরি করছে।’’ তিনি জানান, বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে যাত্রীদের সাহায্যের চেষ্টাও চলছে। জেলা তৃণমূলের নেতারা বলছেন, ‘‘যাত্রী নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলছে রেল। তা হলে রেল সুরক্ষা বাহিনী কী করছে? আধা সামরিক বাহিনীও রেলের জন্য ব্যবহার করা যায়। তা না করে আধা সামরিক বাহিনী দিয়ে বিজেপি নেতাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
বিজেপি’র পাল্টা দাবি, রাজনীতি করছেন শুধু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলবল। এর জেরে বিপাকে সাধারণ মানুষ। নাগরিকপঞ্জি বিরোধিতার কথা বলে রাস্তায় মানুষ নামিয়ে দিয়ে রেল পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। বিজ্ঞাপন দিয়ে আতঙ্ক আরও বাড়ানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সম্পত্তির বেশি করে নিশানা করা হয়েছে। দলের রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রথীন বসু বলেছেন, ‘‘কে কাদের পাশে দাঁড়ায়, তা সবাই জানে। তারাই ভাঙচুর করছে। আর দোষ হচ্ছে আমাদের। আমরাও পাল্টাও রাস্তায় নামছি।’’
বামেদের দাবি, কেউ একা নয়, পর্দার আড়ালে দুই তরফই রাজনীতি চলছে ধর্মের ভিত্তিতে। একপক্ষ হিন্দুত্বের জিগির তুলে রয়েছে। আরেকদল উল্টোপক্ষের ভোটের কথা ভেবে পিছন থেকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। এই রাজনীতির ঠেলায় বিপাকে আম জনতা। সোমবারই শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিংহকে চিঠি পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অশোক বলেছেন, ‘‘রাজায় রাজায় রাজনীতির যুদ্ধ হচ্ছে, আর প্রাণ ওষ্ঠাগত সাধারণের। কী হচ্ছে এসব! গোলমাল তৈরি করা হচ্ছে, আর তার ফাঁকে একদল ঢুকে পড়ে নানা ফায়দা তুলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy