প্রতীকী ছবি।
গত দেড় বছর করোনার দাপটে জবুথবু হয়ে ঘরবন্দি ছিল বাঙালি। পুজোর মুখে সংক্রমণ কমতেই বাঙালি পর্যটকদের ভিড় হামলে পড়েছিল দার্জিলিং, কালিম্পং ও ডুয়ার্সে। হোটেল, রিসর্ট থেকে হোম-স্টে— ক’দিন তিল ধারণের জায়গা ছিল না। গাড়ি ভাড়া আকাশছোঁয়া হয়ে যায়। একই ছবি দীপাবলিতেও। এ বার অবাঙালি পর্যটকদের সংখ্যা আবার বেশি। বিমানে নিয়মবিধি কমেছে, ধীরে ধীরে বাড়ছে রাজ্যে বাস ও ট্রেনের সংখ্যাও। দীপাবলির আগে থেকে তাই দার্জিলিং, সিকিমে ভিড় গুজরাত, দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের পর্যটকদের। গত তিন বছরে ভিড়ের নিরিখে যা রেকর্ডও হচ্ছে। কিন্তু এই ভিড়ে বাড়বাড়ন্ত কি ফের পাহাড়ে নতুন করে সংক্রমণ ছড়াবে না? প্রশ্নটা উঠেছে বিভিন্ন মহলেই। যদিও এরই মধ্যে পুলিশের তরফে মাস্ক পরায় জোর দেওয়া হয়েছে পাহাড় ও সমতলে। পর্যটকদের ভিড় প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রেম দোরজি ভুটিয়ার মতে, ঘোরাঘুরি বা বেড়ানো ঠিক আছে। কিন্তু প্রশাসনকে মাস্ক পরাটায় কড়াকড়ি করতে হবে। পর্যটকদের দিকেও নজর রাখা জরুরি। সঙ্গে সানিটাইজ়েশনে জোর দিয়ে ভিড় এড়ানোটা এখনও জরুরি।
রাজ্য পর্যটন দফতরের এক সচিবের কথায়, ‘‘করোনা এখনও ছেড়ে যায়নি। কিন্তু মানুষ আর ঘরে থাকতে চাইছেন না। তাই রাজ্যের পর্যটক দিয়ে শুরু হয়েছিল, দীপাবলিতে ভিনরাজ্যের পর্যটকদের সংখ্যাই বেশি। পরিস্থিতি এমন চললে, বড়দিন-নতুন বছরের মরসুমটা ভালই যাবে বলে মনে হচ্ছে।’’
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, ২০২০ সালে গরমের মরসুম শুরু মুখেই গোটা দেশে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়। ওই বছরের পর্যটন মরসুম তো দূরের কথা, অধিকাংশ সময়টাই লকডাউনে কাটিয়েছেন বাসিন্দারা। একে একে বন্ধ হয়ে যেতে থাকে হোটেল, রিসর্টগুলি। কর্মী ছাঁটাই, বেতন বন্ধ বা কমিয়ে দেওয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। দার্জিলিঙে শতাব্দীপ্রাচীন হেরিটেজ হোটেল বন্ধের মুখে এসে দাঁড়ায়। পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়ে দেন, উত্তরবঙ্গ এবং সিকিম মিলিয়ে প্রতিদিন ২৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে পর্যটন শিল্পে। ছোট ছোট বহু সংস্থা টিকে থাকার লড়াই শুরু করে।
বছরখানেক পর এ বছর আবার শুরুতে দ্বিতীয় করোনা ঢেউয়ে আক্রান্ত হয় দেশ তথা রাজ্য। বড় সমস্যার মুখে পড়েন হোম-স্টে মালিকেরা। বর্ষার পরপর কিছু হোম-স্টে, রিসর্ট খোলা শুরু হয়। কিন্তু গ্রামীণ সমাজ বা পাহাড়ি সমাজের ফতোয়ায় অনেক জায়গায় চালু করা যায়নি পর্যটন। শেষে পুজোর ক’মাস আগে থেকে পরিস্থিতি বদলায়। পুজোর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক উত্তরবঙ্গে এসেছেন। পুজোর আগে থেকে ও পুজোর সময়ে দার্জিলিঙে পা ফেলার জায়গা ছিল না। কালিম্পং ও ডুয়ার্সের একই পরিস্থিতি। সিকিমে কড়াকড়ি বেশি থাকায় প্রথমে ভিড় কম হলেও এখন বেড়েছে।
এরই মধ্যে ধস, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পড়ে পাহাড়। জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। পর্যটকেরা রাস্তায় আটকে রাত কাটান। কিন্তু উৎসাহ এ বার কমেনি। পরিস্থিতির ২-৩ দিনে বদল হতেই ভিড় পাহাড়মুখী হয়ে ওঠে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘করোনার আগের কয়েক বছরের তুলানায় ১৫-২০ শতাংশ পর্যটক বেশি আসছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy