এবার পুজোয় দার্জিলিংও তুলনামূলক ফাঁকা।
ছত্তিশগঢ়ের ভিলাই থেকে আত্মীয়েরা মহালয়ার সকালেই এসে গিয়েছেন শিলিগুড়ি মিলনপল্লির সমর মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি। পরিবারের ক’জন মিলে পুজোর ২-৩ দিন ঘোরার পরিকল্পনা করতেই অনেকে তাঁদের বলেন, ‘‘গাড়ি, ঘর কী পাবেন!’’ খোঁজ করতে গিয়ে সমর দেখেন পুজোর সময় লোলেগাঁও-র মত পর্যটন কেন্দ্রে সরকারি বাংলো খালি মিলছে।
মাসখানেক আগে মুম্বইয়ের বিমানের টিকিটের কাটতে বিভিন্ন এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন জলপাইগুড়ির সেনপাড়ার বিমল চৌধুরীর পরিবার। পুজোর সময়ে বাগডোগরা থেকে টিকিটপ্রতি ১২-১৪ হাজার টাকা ধরেছিলেন বিমল। শেষে টিকিট পান ৯ হাজারের সামান্য বেশি টাকায়। এরকম ছবি কেন? পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলছেন মন্দার প্রভাব পড়েছে পর্যটনেও।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এ বছর পুজো বা উৎসবের হাতে গোনা ক’টা দিন বাদ দিলে ব্যবসা প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ কমেছে। হোটেল, রিসর্ট থেকে গাড়ি, বিমানের টিকিটে প্রভাব পড়েছে। আর্থিক মন্দার প্রভাবের পাশাপাশি জুড়েছে বর্ষা। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কর্পোরেট ট্যুর থেকে শুরু করে সাধারণ পর্যটকদের বিভিন্ন বুকিং সবকিছুই কমেছে। তাঁরা মনে করছেন, মন্দার জন্য টাকা খরচের ক্ষেত্রে সকলেই সাবধান হচ্ছেন। অনেকেই বড় ট্যুর বাতিল করেছেন। অনেকে লম্বা সফরের পরিবর্তে ২-৩ দিনের জন্য ছোট পরিকল্পা করছেন। এই প্রবণতা রাজ্য হোক বা ভিন্রাজ্য সব জায়গার পর্যটকদের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছে পর্যটন মহল।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পর্যটনে আগাম বুকিং দেখেই ব্যবসার গতিপ্রকৃতি বোঝা যায়। সেপ্টেম্বর বা তার আগেই মহালয়া থেকে শুরু করে নতুন বছরের গোড়া পর্যন্ত বুকিংয়ের প্রায় পুরোটাই হয়ে যায় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। তাতেই এ বার ভাঁটার টান বলে তাঁদের দাবি। পর্যটন সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, এ বার শুধুমাত্র পুজোর দিনগুলিতে পর্যটকদের ভিড় থাকলেও অন্য সময় ব্যবসা কমেছে। বড় ব্যবসায়ীরা কর্পোরেট, বিদেশি পর্যটক দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও ছোট ছোট অপারেটর, হোটেল-রির্সট ব্যবসায়ী, গাড়ির মালিকেরা মন্দার জেরে সমস্যায় পড়েছেন। অনেকক্ষেত্রে অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে দামি হোটেলের ঘর।
পুজোয় দার্জিলিং বরাবর আকষর্ণীয়। কিন্তু দার্জিলিং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস-র সম্পাদক প্রদীপ লামা বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে গোলমালের বছরগুলি ছাড়া এমন অবস্থা হয়নি। অনেকে কর্মী কমানোর চিন্তা করছে।’’ গ্যাংটক, দার্জিলিং, কালিম্পং, লাভা-লোলগাঁও বা ডুয়ার্সে পুজোর দিন বাদ দিলে বাকি মরসুমে ঘর-গাড়ি মিলছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘মানুষ বিনোদনের বদলে জরুরি কাজের জন্য টাকা রাখছেন।’’ পর্যটন সংগঠন এতোয়ার সাধারণ সম্পাদক সন্দীপন ঘোষ বলেন, ‘‘২২ বছরে এমন পরিস্থিতি পাইনি। ছোট ব্যবসায়ীরা তো টিকতে পারবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy