Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

ভিড় জমাতে ‘টার্গেট’ দলে

পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই মাঠে পঞ্চাশ হাজার মানুষের জমায়েতের মতো জায়গা রয়েছে। আশপাশ মিলিয়ে আরও দশ-পনেরো হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন।

এবিএন শীল কলেজ থেকে হোটেলের পথে মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

এবিএন শীল কলেজ থেকে হোটেলের পথে মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩ ০৪:৪৪
Share: Save:

ব্লক ধরে ধরে বেঁধে দেওয়া হয়েছে ‘টার্গেট’। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাছের ব্লক থেকে ২০ হাজার, দূরের ব্লক থেকে ১০-১৫ হাজার, সব মিলিয়ে কমপক্ষে দেড় লক্ষ লোক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় হাজির করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল। দলের নেতারা অবশ্য বলছেন, তাঁরা চান পাঁচ লক্ষ মানুষের ভিড়। সোমবার কোচবিহারে দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের চান্দামারি প্রাণনাথ হাইস্কুলের মাঠে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।

পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই মাঠে পঞ্চাশ হাজার মানুষের জমায়েতের মতো জায়গা রয়েছে। আশপাশ মিলিয়ে আরও দশ-পনেরো হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন। কিন্তু দেড়-দুই লক্ষ মানুষ হলে গোটা এলাকায় জনপ্লাবন হবে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল নেত্রীর সভায় লোক নিয়ে যাওয়ার জন্য গ্রামে গ্রামে হুমকি দিচ্ছে শাসক শিবির। সেই সঙ্গেই খাওয়াদাওয়া ও দিনহাজিরার টোপও দেওয়া হচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক দল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যাওয়ার জন্য কোচবিহারের মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন। কোনও হুমকির প্রয়োজন নেই। আসলে বিরোধীরা বুঝতে পেরেছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে হার ছাড়া কোনও রাস্তা নেই। তাই নানা কথা বলছে।’’

মুখ্যমন্ত্রী যেখানে সভা করছেন সেই জায়গার নাম চান্দামারি। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার মধ্যে ওই এলাকা। এলাকাটি ঘিরে রয়েছে আরও চারটি বিধানসভা কেন্দ্র— দিনহাটা, সিতাই, শীতলখুচি এবং মাথাভাঙা। মেখলিগঞ্জ, কোচবিহার উত্তর, তুফানগঞ্জ বিধানসভা কিছুটা দূরে ওই এলাকা থেকে। নাটাবাড়ি বিধানসভার বড় অংশ থেকেও ওই এলাকায় সহজে যাতায়াত করা যায়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জায়গা ঘিরে যে ব্লকগুলি রয়েছে, সেখান থেকে কুড়ি হাজার করে মানুষ নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে ছয়টি ব্লক। বাকি আরও ছয়টি ব্লক রয়েছে জেলায়। ওই ব্লকগুলি থেকে দশ হাজার করে লোক নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি ও বেসরকারি বাস, ট্রাক, ছোট গাড়ি, অটো, টোটো ভাড়া করা হয়েছে। এক হাজারের বেশি গাড়ি নিয়ে সভাস্থলে পৌঁছবেন মানুষ। আশেপাশের তৃণমূল কর্মী-সমর্থেকরা হাঁটাপথে সভায় পৌঁছবেন।

এমন পরিস্থিতিতে জেলায় যাত্রী পরিষেবা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘এখন তৃণমূল নেত্রীর সভায় মানুষ যেতে চান না। জোর করে নানা প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাতে লাভ হবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটুকু বলতে পারি, এ বারে কোচবিহারে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেইঅধিকাংশ আসনে আমরা জয়ী হবো। তৃণমূল যতই চেষ্টা করুক, তা আটকাতে পারবে না।’’ বাম নেতা তথা সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, ‘‘ভোট যদি স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়, তা হলে তৃণমূল ও বিজেপি দু’পক্ষেরই পরাজয় হবে।’’

বিরোধীদের কথা মানতে নারাজ শাসক দল। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ‘‘এ বার মনোনয়ন ঘিরে কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। তার পরেও বিরোধীরা সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোচবিহারে পর পর দু’টি ভোটে খারাপ ফল হয়েছিল। এ কথা অস্বীকারের কিছু নেই। কিন্তু তার পর থেকেই আবার তৃণমূলের প্ৰতি মানুষের সমর্থন বাড়তে শুরু করেছে। গত পুরসভা নির্বাচনেই তা স্পষ্ট হয়েছে। দলনেত্রীর প্রচারে কর্মীরা উজ্জীবিত হবেন।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘দলনেত্রীর একটি সভা মানে এলাকা বিরোধী শূন্য। তা বুঝতে পেরেই ভিত্তিহীন কিছু অভিযোগতুলছে বিজেপি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy