Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
TMC

মিথ্যা মামলা করেছেন তৃণমূল বিধায়ক, অভিযোগ জওয়ানের

ঘটনার সূত্রপাত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন সিতাইয়ের বালাপুকুরিতে রামমন্দির উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক।

TMC

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:১৭
Share: Save:

ছুটিতে বাড়িতে আসা এক সিআরপিএফ জওয়ানকে ‘মিথ্যা মামলায়’ ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়ার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই জওয়ানকে বিধায়ক খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। ওই জওয়ানের দাবি, তাঁর স্ত্রী বিজেপি করেন। সে জন্যেই তাঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বিধায়ক অবশ্য ওই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি কোনও হুমকি দেইনি। আমি ওই যুবককে সদুপদেশ দিয়েছি। আধা সামরিক বাহিনীতে চাকুরি করে সরাসরি রাজনীতি করা ঠিক নয়। সে ক্ষেত্রে যে কোনও মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে কথাই বলছি।’’

রবিবার কোচবিহারে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই সিআরপিএফ জওয়ান বিশ্বজিৎ বর্মণ বলেন, ‘‘আমি রাজনীতি করি না। আমার স্ত্রী বিজেপি করেন। সিতাইয়ের শাসক দলের বিধায়ক আমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ফোন করে হুমকিও দিয়েছেন, যে কোনও খুনের মামলাতেও আমার নাম ঢুকে যেতে পারে।’’ দাবির স্বপক্ষে মোবাইল ফোনের কথোপকথনও তুলে ধরেন ওই জওয়ান। জওয়ান দাবি করেন, ওই কথোপকথনের এক দিকে জওয়ান নিজে রয়েছেন, উল্টো দিকে সিতাইয়ের বিধায়ক। সেখানে ওই জওয়ানকে সতর্ক করার কথা শোনা যাচ্ছে। (আনন্দবাজার ওই কথোপকথনের সত্যতা যাচাই করেনি)।

ঘটনার সূত্রপাত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন সিতাইয়ের বালাপুকুরিতে রামমন্দির উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। সেখানে হাজির ছিলেন ওই জওয়ান বিশ্বজিৎ। মন্দির উদ্বোধনের পরে কনভয় নিয়ে বেরিয়ে যান নিশীথ। তাঁর কনভয়ের পিছনে একটি বাইক মিছিলও সাগরদিঘি সেতু পর্যন্ত যায়। অভিযোগ, ওই বাইক মিছিল থেকে সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশের ছেলে কুন্তল ও তাঁর বন্ধু প্রত্যয় বর্মণের উপরে হামলা করে বিজেপি কর্মীরা। কুন্তল সেখান থেকে বেরোতে পারলেও আটকা পড়ে যান প্রত্যয়। তাঁকে সেখানে বেধড়ক মারধর করা হয়। প্রত্যয়ের বাবা মৃণ্ময় অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে স্নাতক পড়ুয়া। সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন তাঁরা। তার পরেও প্রত্যয়কে রাস্তায় ফেলে বিজেপি সমর্থকেরা মারধর করে। তাঁকে প্রথমে সিতাই হাসপাতালে ও পরে সেখান থেকে দিনহাটা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ঘটনায় ১৮ জনের নামে থানায় এফআইআর করেন প্রত্যয়। তাঁর বাবা বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় যারা অভিযুক্ত, তাদের বেশ কয়েক জনকে আমার ছেলে চিনতে পেরেছে। বাকিদের বিধায়কের ছেলে চিনতে পেরেছেন। তাদের নামই অভিযোগে রয়েছে।’’

ওই অভিযোগের তালিকাতেই নাম রয়েছে বিশ্বজিতের। তাঁর স্ত্রী বিউটি বিজেপির কোচবিহার জেলা কমিটির সদস্য। বিশ্বজিৎ ষোলো বছর ধরে সিআরপিএফের চাকরিতে রয়েছেন। বর্তমানে তিনি শ্রীনগরে রয়েছেন। গত ১জানুয়ারি মায়ের অসুস্থতার জন্যে এক মাসের ছুটি নিয়ে বাড়িতে যান। পরে ওই ছুটি আরও বাড়িয়ে নেন। দু-একদিনের মধ্যেই ফের তাঁর ডিউটিতে যোগ দেওয়ার কথা। তার মধ্যে এমন মামলায় পড়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় আমি সিবিআই তদন্ত দাবি করছি। আমি আদালতে যাব।’’ বিধায়ক বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই উনি ছিলেন বলেই ওই অভিযোগে তাঁর নাম রয়েছে।’’ গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC crpf North Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy