বিক্ষোভ: বিধায়কের বাড়ি ঘেরাও। রবিবার ময়নাগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
গোষ্ঠী কোন্দলের মধ্যে প্রকাশ্যে একে অপরকে তোপ দাগছেন তৃণমূল নেতারা। ঝরছে চোখের জলও।
জলপাইগুড়িতে জেলা তৃণমূলের নয়া কমিটি নিয়ে অশান্তি চলছেই। দলের ভেতরেই ‘এনআরসি’ শুরু করেছেন জেলা সভাপতি, পুরনো নেতাদের পাঠানো হচ্ছে ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’। এই ভাষাতেই জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন বিক্ষুব্ধেরা। জেলা কমিটি থেকে পাল্টা আক্রমণও চলছে।
নয়া কমিটি প্রকাশ্যে আসার পরেই জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ‘ঘোষণা’ করে ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ময়নাগুড়ির বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী। রবিবার তৃণমূলের পতাকা নিয়ে অনন্তের বাড়ি ঘেরাও করেন একদল লোক। বিধায়ক দল ভাঙানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। তাঁকে গালিগালাজও করা হয় বলে বিধায়কের অভিযোগ। এই ঘটনায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন বলে বিধায়ক এ দিন জানিয়েছেন। বিক্ষোভের পরে বিধায়কের চোখে জলও দেখা যায়। ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন প্রবীণ বিধায়ক। তিনি বলেন, “তিনবার বিধায়ক হয়েছি। এত অপমানিত কোনওদিন হইনি। আমি গণতান্ত্রিক ভাবে প্রতিবাদ করেছিলাম, আমার বিরুদ্ধে কিছু বলার থাকলে শান্ত ভাবে বলতে পারত। কিন্তু আমারই দলের পতাকা নিয়ে আমার বাড়িতে এসে গালিগালাজ করে গেল। তাই চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি।” বিধায়কের চোখে জল দেখে পাল্টা তেতে ওঠেন তাঁর অনুগামীরাও।
এ দিনই রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে বলেন, “জেলা সভাপতি এনআরসি-বিরোধী আন্দোলন না করে নিজের দলেই এনআরসি শুরু করেছেন। দলের পুরনো কর্মীদের সব ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাচ্ছেন। এ ভাবে দল চলবে না। সব পুরনো কর্মী ইস্তফা দেবেন।” খগেশ্বরের আক্রমণ পৌঁছেছে জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর কানেও। তবে তিনি নিজে কোনও মন্তব্য না করলেও পাল্টা এগিয়ে এসেছেন জেলা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মোতাহার হোসেন। তিনি বলেন, “মাননীয় খগেশ্বরবাবু দলের সম্পদ। কিন্তু গত লোকসভায় তো খগেশ্বর রায়ের বুথেই দল হেরেছে। রাজগঞ্জ ব্লকে আমরা বিজেপির থেকে অনেক ভোটে পিছিয়ে ছিলাম।” বিধায়কের ইস্তফার হুমকি প্রসঙ্গে মোতাহারের মন্তব্য, “লোকসভা ভোটের পরে ইস্তফার কথা বলা উচিত ছিল। এখন ইস্তফার হুমকি দিলে বিজেপির হাতই শক্ত হবে।”
লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের বিপর্যয়ের পরে রাজ্য নেতৃত্ব সৌরভ চক্রবর্তীকে সরিয়ে কৃষ্ণকুমারকে জেলা সভাপতি করে। দায়িত্ব নিয়েই সভাপতি স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলে ব্লক সভাপতিদের সরিয়ে দেন। নতুন করে জেলা কমিটি গঠন হয়। সেই কমিটির নাম প্রকাশ্যে আসতেই বিধায়ক ও অন্য জনপ্রতিনিধিরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, কাউকে না জানিয়ে পুরনোদের বাদ দিয়ে কমিটি গড়া হয়েছে। দলে গোষ্ঠী কোন্দল সামাল দিতে আগামী মঙ্গলবার জেলায় দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস জলপাইগুড়িতে আসছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy