উদয়ন গুহ। — ফাইল চিত্র।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেই তৃণমূলের দাবি, উত্তরবঙ্গের তিন জেলা কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে বেশ কিছু আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবে তারা। বিরোধীরা অবশ্য তৃণমূলের দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাদের দাবি, জোর করে দু’-একটি আসনে প্রার্থী দিতে বাধা দিয়েছেরাজ্যের শাসক দল। বাকি সব আসনে লড়াই হবে।
কোচবিহারে পঞ্চাশটিরও বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এমনটাই দাবি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি উদয়ন গুহর। বৃহস্পতিবার রাতে উদয়ন দাবি করেন, দিনহাটা ২ ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৪২টি আসনের মধ্যে ৪৬টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। একই ভাবে পঞ্চায়েত সমিতির ৩৬টি আসনের মধ্যে সাতটিতে তৃণমূল জয়ী হয়েছে বলেও দাবি করেন। ওই ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত চৌধুরীহাট ও শুকারুরকুঠিতে তৃণমূল জয়ী হয়েছে বলেও দাবি করেন। প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, মনোনয়ন প্রত্যাহার ও বিশদে খতিয়ে দেখার পরেই সব ঘোষণা সম্ভব হবে। বিরোধীরা অবশ্য স্বীকার করেন, তাঁরা কিছু আসনে প্রার্থী দিতে পারেননি। বিজেপির কোচবিহার জেলার সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘আমরা অধিকাংশ আসনে প্রার্থী দিয়েছি। তৃণমূল এখন আনন্দ করুক। পরে পুরো তথ্য বুঝতে পারবে।’’
আলিপুরদুয়ার জেলায় মনোনয়ন পর্ব শেষের পরে জেলার আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে বলে দাবি শাসক দলের নেতাদের। অন্য দিকে, বিজেপির দাবি, ওই চারটি কেন্দ্রে তাদের প্রার্থীদের ভয় দেখানোয় মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি তাঁরা। এ দিকে, কালচিনি ব্লকের রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দমনপুর, উত্তর পোরো এবং দক্ষিণ পোরো পঞ্চায়েত আসন এবং কুমারগ্রাম ব্লকের ভুটিয়াবস্তি আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে বলে দাবি দলের জেলা তৃণমলের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর মজুমদারের। আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সভাপতি ভূষণ মোদক বলেন, ‘‘ওই চারটি আসনে আমাদের প্রার্থীরা তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। নির্বাচনে তৃণমূল এর জবাব ভোট বাক্সে পেয়ে যাবে।’’ ভাস্করের কটাক্ষ, ‘‘বিরোধীরা প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় আসনগুলিতে আমাদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। জেলায় কোথাও সন্ত্রাস হয়নি।’’
জলপাইগুড়িতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার নিরিখে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। ১,৭০১টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে অন্তত তিনশোটিতে প্রস্তাবিত প্রার্থী তালিকা রাজ্য নেতৃ্ত্বের কাছে পাঠাতে পারেনি জেলা বিজেপি। এই সব আসনে প্রার্থী পাওয়া যাবে না বলেই জেলার নিজস্ব রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে, প্রশাসনিক রিপোর্টে দেখা যায়, বিজেপি মনোনয়ন জমা দিয়েছে ১৬৭৮টি আসনে। দল সূত্রের খবর, অন্তত তিরিশটি আসনের জন্য একাধিক মনোনয়ন জমা পড়েছে, সেগুলিও এর মধ্যে রয়েছে। সব মিলিয়ে বিজেপি মনোনয়ন দিতে পারেনি এমন সংখ্যা একশোরও কম হবে বলে দাবি। মনোনয়নের নিরিখে বিজেপির থেকে ঢের পিছিয়েবাম এবং কংগ্রেস। বামেরা মনোনয়ন দিয়েছে এগারোশোর কাছাকাছি আসনে, কংগ্রেসের হয়ে মনোনয়ন জমা পড়েছে ২৭৬টি।
যদি বাম এবং কংগ্রেসের নিচুতলায় জোট হয়, তার পরেও অন্তত চারশো আসন থাকবে, যেখানে বাম ও কংগ্রেস কারও প্রার্থী থাকবে না। স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলি ছাড়াও বহু সংগঠনের তরফে মনোনয়ন জমা পড়েছে। যেমন কামতাপুরীদের সংগঠন, গ্রেটারের থেকেও জলপাইগুড়ি জেলার কিছু আসনে মনোনয়নজমা পড়েছে।
কনিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭৪ টি আসন এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৯ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy