রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মতো ধূপগুড়ি পুরসভা ও গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। প্রতীকী ছবি।
খোদ তৃণমূল নেতার বাড়িই ডেঙ্গির আঁতুড়ঘর! ওই নেতার বাড়িতে রয়েছে একটি বরফ তৈরির কারখানা। সেখানকার জমা জলে জন্মাচ্ছে ডেঙ্গির লার্ভা। পরিদর্শনের সময়ে ওই নেতার বাড়িতে গিয়ে তার প্রমাণও পেয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। আর সেই জলেই তৈরি হওয়া বরফ বিক্রি হচ্ছে বাজারে। স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ থাকা সত্বেও বরফ তৈরি বন্ধ হয়নি ওই কারখানায়। জলপাইগুড়ি জেলার এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠল।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মতো ধূপগুড়ি পুরসভা ও গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। ধূপগুড়ি পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা কৃষ্ণদেব রায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ধূপগুড়ি পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তথা ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর রাজেশকুমার সিংহের বাড়ির পাশেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত তাঁর দলের নেতা। ধূপগুড়ি পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা তৃপাল পাল এবং তাঁর মেয়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে ঘিরেই এই অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিজেপির অভিযোগ, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীদের দল আক্রান্ত তৃণমূল নেতার বাড়িতে সমীক্ষা করতে গেলে দেখতে পান, সে বাড়িতে বরফ তৈরির কারখানা রয়েছে। সেখানে মজুত রাখা জলে ডেঙ্গির লার্ভা কিলবিল করছে। আবার সেই মজুত রাখা জল থেকে তৈরি হওয়া বরফ শহর জুড়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বরফ তৈরির কাজ বন্ধ করতে বললেও কারখানা বন্ধ হয়নি। যদিও পুরসভার তরফ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মশার লার্ভা নিধনের জন্য ওষুধ স্প্রে করা শুরু হয়েছে।’’ শচীন বর্মণ নামে ওই বরফ কারখানার এক কর্মচারী বলেন, ‘‘আমরা মালিকের সঙ্গে কথা বলে সেই মতো কাজ করব।’’
বিজেপির এই অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন পুরসভার এক স্বাস্থ্যকর্মী। পিঙ্কি সাহা নামে ধূপগুড়ি পুরসভার ওই স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘‘আমরা তৃপাল পালের বাড়িতে সার্ভে করতে গিয়ে লক্ষ্য করেছি, ওঁর বাড়িতেই বরফ তৈরির কারখানা রয়েছে। সেখানে মজুত রাখা জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মশার লার্ভা। সেই জলেই তৈরি হচ্ছে বরফ। তাই আমরা কর্মচারীদের কারখানা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি এবং গোটা বিষয়টি পুর দফতরকে জানাব।’’ এ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল। ধূপগুড়ি পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভের ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা তৃণমূল নেতা রাজেশকুমার সিংহ বলেন, ‘‘আমরা পুরসভার তরফ থেকে বিষয়টা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’
বিজেপির ধূপগুড়ি বিধানসভা আহ্বায়ক চন্দন দত্ত বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে তথ্য গোপন করছে স্বাস্থ্য দফতর। আর ডেঙ্গিনিধন নিয়ে যে ধরনের প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়ার কথা পুর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের, তার কোনওটাই নেই। ধুপগুড়ি পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে তাঁর দলের নেতা এবং সন্তান ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর বাড়িতে ডেঙ্গির লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বাড়িতে যে বরফের কারখানা রয়েছে, সেখানে জমা জলে ডেঙ্গির লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। আর সেই জল দিয়ে বরফ তৈরি হচ্ছে এবং তা বাজারে বিক্রি করছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ করা। তা না হলে গোটা শহর ডেঙ্গিতে ভরে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy