একুশের মঞ্চে জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। — নিজস্ব চিত্র।
ভোটে জয়ের পরে কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার প্রশংসা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে বক্তৃতা দিলেন সেই জগদীশ। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজবংশী মুখ হিসেবে জগদীশকে সামনের সারিতে এনে উত্তরবঙ্গ জুড়ে বার্তা দিতে চাইছে তৃণমূল।একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গের অন্য জেলা, বিশেষ করে মালদহ নিয়ে ওই মঞ্চ থেকেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন মমতা।
দলের অন্দরের খবর, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমন কৌশলেই উত্তরবঙ্গে এগিয়ে যেতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। রবিবার, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূলনেত্রী বলেন, “মালদহে জানি না কেন, আমাদের ভুল বুঝলেন। কিন্তু আমি ভুলিনি। আমি মনে করি, মালদহের আম, আমসত্ত্ব আমরা ২০২৬-এ পাব। কোচবিহারের মানুষকে ধন্যবাদ, অনেক লড়াই করেছেন।” তাঁর সংযোজন, “উত্তরবঙ্গে আমাদের ফল খারাপ হয়েছে। আশা করি, আমাদের আগামী দিনে সেখানকার মানুষ সমর্থন দেবেন।” সেই সঙ্গে চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে দলের সাফল্যের জন্যও জনতাকে ধন্যবাদ জানান মমতা। সেই প্রসঙ্গে তিনি রায়গঞ্জের কথাও উল্লেখ করেন।
উত্তরবঙ্গে এ বার লোকসভা ভোটে ভাল ফল করতে পারেনি তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের আটটি আসনের মধ্যে একমাত্র কোচবিহার আসন দখল করেছে রাজ্যের শাসক দল। কোচবিহারে তৃণমূলের লড়াই কঠিন ছিল। কারণ এই আসনে বিজেপির ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী ছিলেন নিশীথ প্রামাণিক। কিন্তু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির রাজবংশী নেতা হিসেবে পরিচিত জগদীশ ৩৯ হাজার ২৫০ ভোটে হারিয়ে দেন নিশীথকে। এই জয়কে তাই অনেকটাই গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ভোট নিজেদের দিকে টানতে জগদীশকেই সামনের দিকে এগিয়ে দিতে চাইছে দল।
এ দিন একুশের মঞ্চে রাজবংশী ভাষায় বক্তৃতা করেন জগদীশ। উত্তরবঙ্গের জন্য কী কী উন্নয়ন করেছে রাজ্য সরকার, তার বিস্তৃত খতিয়ান তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে, কেন্দ্রীয় সরকার আশ্বাস দেওয়ার পরেও রাজবংশীদের জন্য যে কিছুই করেনি, সেই অভিযোগও তোলেন তিনি। জগদীশ বলেন, ‘‘দুই-এক জন রাজবংশী নেতা আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খান। আমরা টের পাই না। ভোট আসলে বিজেপিকে ভোট দিয়ে জিতিয়ে দেন।’’
রাজবংশী সম্প্রদায়ের নামে একাধিক সংগঠন রয়েছে কোচবিহারে, জগদীশ তাদের নিশানা করেই এমন মন্তব্য করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এ দিন জগদীশ আরও বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার অনেক আশ্বাস দিয়েছিল। তার কোনও কিছুই পূরণ করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সব পূরণ করেছেন।’’
২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে সব আসনেই ঘাসফুল ফোটানোর বার্তাও দিয়েছেন জগদীশ। তিনি বলেন, “আমাদের শপথ নিতে হবে, ২০২৬-এ উত্তরবঙ্গের সব আসন যাতে তৃণমূল পায়। কোচবিহার জিতলে উত্তরবঙ্গে লড়াই শেষ হবে না, কোচবিহার থেকে মালদহে যত দিন না জোড়াফুল ফুটবে, তত দিন আমার লড়াই শেষ হবে না।’’
বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ নিয়ে তৃণমূলের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy