নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনায় ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ ঘিরে এ বার প্রকাশ্য চলে এল শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল। গীতালদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রোতিরন্দন গ্রামের ঘটনা। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আজিজুল হকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দলের অঞ্চল সভাপতি মাফুজার রহমানের বিরুদ্ধে। আজিজুলের দাবি, অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে আবাস প্লাসে গরিব মানুষের থেকে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হওয়ায় তাঁর বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন মাফুজার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ ঘিরে সকাল থেকেই তপ্ত হয়ে ছিল গীতালদহ এলাকা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে দিনহাটার পুলিশও। যুযুধান দু’পক্ষকে সরিয়ে পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণও করে তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তার খানিকক্ষণ বাদেই আজিজুলের বাড়িতে আগুন লাগার খবর আসে। যদিও তা সঙ্গে সঙ্গেই নেভানো হয়। আজিজুল ও তাঁর বাবাকে দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
আজিজুলের অভিযোগ, মাফুজার এলাকার গরিব মানুষের থেকে ২০ হাজার টাকা করে নিচ্ছিলেন আবাস যোজনার বাড়ির জন্য। কেউ দিতে না পারলে প্রভাব খাটিয়ে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছিল। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তিনি বিডিওর দফতরে গোটা বিষয়টি জানান। সেই কারণেই তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে তাঁকে। উল্টো দিকে, মাফুজারের দাবি, আজিজুলের লোকেরাই এলাকার দুই তৃণমূলকর্মীকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। তা জানতে পেরে তিনিই পুলিশে জানান। অঞ্চল সভাপতির কথায়, ‘‘আমি নিজেও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম পুলিশের সঙ্গে। কেউ যদি মিথ্যা নাটক করে, তা হলে কিছু বলার নেই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, ‘‘অতীতেও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। কেউ গোলমাল করলেই গ্রেফতার করা হবে।’’
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে শাসকদলের নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘দলগত ভাবে আমাদের নির্দেশ রয়েছে, ঘরের জন্য যদি কেউ টাকা চান, তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পঞ্চায়েত সদস্য ঘরের জন্য টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করেছেন। ভালই কাজ করেছেন উনি। কিন্তু এটাও দেখতে হবে, তাঁর কাছে কোনও তথ্যপ্রমাণ রয়েছে কি না। কারণ, এই ধরনের অভিযোগে এক জনের রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই, তথ্যপ্রমাণ হাতে নিয়েই এই ধরনের অভিযোগ তোলা ভাল।’’
এ নিয়ে তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতিরাভা রায় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের দুর্নীতি প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এত দিন সাধারণ মানুষ এই দুর্নীতির প্রতিবাদ করছিলেন। এখন বহু পঞ্চায়েত সদস্য এই দুর্নীতির প্রতিবাদ করছেন। অনেকে দলের পদ ছাড়ছেন, আবার অনেকে দল ছাড়ছেন। যাঁরাই প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেতারা। মানুষ আর তৃণমূলের পাশে নেই। আগামী নির্বাচনে মানুষ এর জবাব দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy