Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
PMAY

কত অভাবী হলে মিলবে সাহায্য, প্রশ্ন

এমন অবস্থায় আর কতটা অভাবী হলে পঞ্চায়েতের সাহায্য জুটবে।

অসহায়: স্ত্রীর সঙ্গে নিতাইচন্দ্র দাস। নয়াটুলিতে। নিজস্ব চিত্র

অসহায়: স্ত্রীর সঙ্গে নিতাইচন্দ্র দাস। নয়াটুলিতে। নিজস্ব চিত্র

বাপি মজুমদার 
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৫১
Share: Save:

সাত বছর আগে এক চোখে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। অন্য চোখেও ঝাপসা দেখেন। এমন অবস্থায় আর দিনমজুরির কাজ করতে পারেন না তিনি। সংসার টানতে বাধ্য হয়েই স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। তাতে যেটুকু আয় হয় তা দিয়ে একবেলাও ঠিকমতো খাবার জোটে না। কিন্তু প্রচণ্ড অনটনেও বন্ধ হয়নি দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনা। ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে, মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। চার জনের থাকার জন্য রয়েছে একটিই ঘর।

এমন অবস্থায় আর কতটা অভাবী হলে পঞ্চায়েতের সাহায্য জুটবে। জুটবে আবাস যোজনায় ঘর— এমনই প্রশ্ন নিয়ে বুধবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন মালদহের চাঁচলের নয়াটুলির নিতাইচন্দ্র দাস। অভিযোগ, চাঁচল ২ ব্লকের মালতীপুর পঞ্চায়েতের লালগঞ্জ বুথের নয়াটোলার বাসিন্দা ষাটোর্ধ ওই বৃদ্ধের প্রতিবন্ধী ভাতাও জোটেনি। এমনকী আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকলেও ‘কাটমানি’ দিতে না পারায় তার বরাদ্দ মেলেনি।

চাঁচল ২ ব্লকের বিডিও অমিতকুমার সাউ বলেন, ‘‘আবাস যোজনায় নাম থাকলে অবশ্যই তিনি সেই সুযোগ পাবেন। তাঁকে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি যাতে প্রতিবন্ধী ভাতা পান তাও দেখা হবে।’’

লালগঞ্জের নয়াটুলিতে বাড়ি বলতে একটি মাত্র ঘর নিতাইয়ের। অর্থাভাবে সংস্কার করতে না পারায় বেড়ার দেওয়াল হেলে পড়েছে। চেয়েচিন্তে জোগাড় করা টিন দিয়ে তৈরি ছাদেও অসংখ্য ফুটো। বৃষ্টি হলে ঘরের কোণে গুটিসুটি হয়ে বসে থাকতে হয় তার জনকে।

নিতাই জানান, আগে দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু সাত বছর আগে চোখের সমস্যা শুরু হয়। সর্বস্ব বিক্রি করে চিকিৎসা করালেও এক চোখে দৃষ্টিশক্তি হারান। অন্য চোখেও ভাল দেখেন না। সংসারের হাল ধরতে অন্যের বাড়িতে কাজ করেন স্ত্রী গহুলা। কিন্তু তাতে সকলের দু’বেলা খাবার জোটে না।

নিতাই বলেন, ‘‘আবাস যোজনায় পাকা ঘর পাব বলে পঞ্চায়েতের তরফে একাধিক বার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তালিকায় আমার নামও ছিল বলে ওরা জানায়। কিন্তু বাকিরা পেলেও আমার তা জোটেনি। প্রতিবন্ধী শংসাপত্রের জন্য পঞ্চায়েতে ঘুরেও কোনও ফল হয়নি।’’

গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য বীরবল মালো বলেন, ‘‘আবাস যোজনায় ওঁর নাম রয়েছে বলে শুনেছি। প্রধানকে বলে তিনি যাতে বরাদ্দ পান তা দেখছি।’’

মালতীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল হালিম কাটমানি না পাওয়ায় ওই বৃদ্ধের ঘর জোটেনি বলে অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, ‘‘তালিকায় ওঁর নাম রয়েছে কিনা তা পঞ্চায়েতে গিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য উম্মেহানি বিবি বলেন, ‘‘ওই পরিবার যাতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পায় তা আমি নিজে দেখছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

PMAY Chanchal Panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy