Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
GTA Recruitment Case

পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগের বিশদ তথ্য সংগ্রহ শুরু

রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মতো, পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা হাই কোর্টে এ নিয়ে মামলা চলছে।

— প্রতীকী ছবি।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ০৮:১২
Share: Save:

কলকাতা হাই কোর্টের মামলার জন্য দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়োগের বিশদ তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, গত সোমবার ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর (জিটিএ) শিক্ষা বিভাগের তরফে দুই পাহাড়ি জেলার স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যানদের একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় দুই চেয়ারম্যানকে ২০১২-১৯ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তথ্য সংগ্রহ করে রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। সেখানে অস্থায়ী শিক্ষকদের কী ভাবে চাকরি নিয়মিতকরণ (রেগুলারাইজ়েশন) হল, কী-কী নথি জমা করা হয়েছিল, সব রিপোর্টে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। পার্বত্য পরিষদ থেকে ‘জিটিএ’, এই মেয়াদকালের মধ্যে চাকরি প্রাপকদের তালিকায় রাখতে বলা হয়েছে।

রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মতো, পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা হাই কোর্টে এ নিয়ে মামলা চলছে। সেখানে পাহাড়ের অভিযোগও জমার পরে, হাই কোর্ট সিবিআইকে প্রাথমিক ভাবে অভিযোগপত্র খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশ পেয়ে, সিবিআই গত ২৫ এপ্রিল একটি মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট আদালতে জমা করেছে। সরকার এবং ‘জিটিএ’র তরফে মনে করা হচ্ছে, আগামী শুনানি বা কিছু দিনের মধ্যে আদালত পাহাড়ের তথ্য চাইতে পারে। এর মধ্যে রাজ্যের তরফে একটি হলফনামাও জমা পড়েছে। এই অবস্থায় পাহাড়ের প্রাথমিক নিয়োগের তথ্য তৈরি শুরু হয়েছে।

‘জিটিএ’ সূত্রের খবর, আগামী ৬ মে জিটিএ নিয়োগ মামলার শুনানি কলকাতা হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চে হওয়ার কথা রয়েছে। তবে রাজ্যের তরফে করা আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তাতে আপাতত সিবিআই বা নতুন করে তদন্তকারী কোনও সংস্থার হাতে জিটিএ নিয়োগ মামলা যাচ্ছে না। গত সোমবার শুনানির পরে, সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি বিআর গাভাই এবং সন্দীপ মেহতা দুই সপ্তাহ বাদে আবার মামলার দিনক্ষণ ঠিক করেছেন।

যদিও বিষয়টি উচ্চ আদালতের বিচারাধীন বলে ‘জিটিএ’র শিক্ষা দফতর এবং ‘জিটিএ’র চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপাও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে ‘জিটিএ’র এক শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তার কথায়, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা করা হলেও, আমরা সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। পাহাড়ের প্রাথমিকের রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।’’ জিটিএ সূত্রের খবর, পার্বত্য পরিষদ থাকাকালীন কাজে যোগ দেওয়া দুই দফায়, ৬৩০ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়মিতকরণ ২০১২ সালে হয়েছে। আবার ‘জিটিএ’ পাহাড়ের দায়িত্বে আসার পরে, ২০১৯ সালে ১২১ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়মিতকরণ হয়েছে। সব মিলিয়ে হাই কোর্টের জন্য তৈরি রিপোর্টে ৭৫১ জনের তথ্য রাখা হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টে আবেনকারীদের অন্য সুধন গুরুংয়ের দাবি, ‘‘পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগে নিয়মিতকরণের নামে তো স্বজনপোষণ হয়েছে। আমরা তাই সিবিআই তদন্তের দাবি করেছি। প্রাথমিক ভাবে আদালত সিবিআইকে পরীক্ষার জন্য রেখেছে। তদন্তেও রাখা হবে বলে আমরা আশাবাদী।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ‘জিটিএ’র তরফে চাওয়া রিপোর্টে নিয়মিতকরণ হওয়া শিক্ষকদের চাকরির ক্ষেত্রে যোগ্যতা-সহ কোন নথি জমা রয়েছে তা মূলত দেখতে বলা হয়েছে। কারণ, পাহাড়ে ২০০২ সালের পরে, আঞ্চলিক স্কুল সার্ভিস কমিশন নেই। আর প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘অ্যাডহক’ ভিত্তিতে স্কুলবোর্ড এবং ডিআই-য়ের দফতরের মাধ্যমে কাজ হয়েছে। সেখানে স্কুলগুলি কাজ করা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়মিতকরণের নামে অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও অনিয়মের অভিযোগ মানতে চাননি ‘জিটিএ’র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শক্তিপ্রসাদ শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘বেআইনি কিছু নেই। আইন মেনেই সব প্রক্রিয়া চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy