E-Paper

অরণ্যের নিজস্বতা না ফেরালে বন্যেরা লোকালয়ে আসবেই

১৯৭৯ সালে বনকর্মী হিসাবে বক্সা বিভাগের নিমাতি রেঞ্জে কাজে যোগ দিই। এই নিমাতি রেঞ্জের আধিকারিক থাকাকালীন ২০১৮ সালে কর্মজীবন থেকে অবসর নিই।

elephant.

ফাইল চিত্র।

ভবেন্দ্রনাথ ঋষি

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৫৮
Share
Save

যত দূর মনে পড়ে, নব্বইয়ের দশকেই বন্যপ্রাণীদের জঙ্গলে বাইরে বেরিয়ে আসার ঘটনা একটা সময় প্রায়ই ঘটতে শুরু করে। তবে এখনকার মতো তখন দিনে-দুপুরে এ ভাবে বন্যপ্রাণীদের জঙ্গলের বাইরে বেরোতে দেখা যেত না। মূলত, রাতের দিকেই জঙ্গলের কাছে কোনও লোকালয়ে বন্যপ্রাণী বেরিয়েছে বলে খবর পেতাম। কিন্তু তার পরে সময় যত এগোতে শুরু করল, ততই এই প্রবণতা বাড়তে শুরু করল। বাড়তে শুরু করল বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে মানুষের সংঘাতও। এখন তো জঙ্গল থেকে হাতি, বাইসনদের মতো বন্যপ্রাণীর লোকালয়ে বেরিয়ে আসাটা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মূলত, বনের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাওয়াটাই এর অন্যতম কারণ বলে আমার মনে হয়।

১৯৭৯ সালে বনকর্মী হিসাবে বক্সা বিভাগের নিমাতি রেঞ্জে কাজে যোগ দিই। এই নিমাতি রেঞ্জের আধিকারিক থাকাকালীন ২০১৮ সালে কর্মজীবন থেকে অবসর নিই। মাঝের দীর্ঘ সময়ের মধ্যে বক্সা ডিভিশন বা বর্তমান ব্যাঘ্র প্রকল্পে প্রায় ২৩ বছর চাকরি করেছি। এ ছাড়াও কর্মসূত্রে ছিলাম বন দফতরের বর্ধমান, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির গরুমারা ডিভিশনেও। কর্মজীবনের শুরুর দিকে বন্যপ্রাণীদের জঙ্গলের বাইরে খুব বেশি বেরিয়ে আসতে দেখিনি। শেষ দু’দশকেই এটা দেখছি।

একটা সময় জঙ্গলের ভিতরে রাস্তার দু’ধারে বেতগাছ, চালতা, কলাগাছ ও নানা ধরনের গাছে ভরে থাকত। এখন সেগুলি অনেকটাই কমে গিয়েছে। উল্টে জঙ্গলের ভিতরে হাজার হাজার গবাদি পশু ঢুকে পড়ছে। গরু চরাতে বা কাঠ সংগ্রহ করতে বহু মানুষও জঙ্গলে ঢুকছে। ফলে জঙ্গলের ভিতরের নির্জনতা ও শান্তিও কমছে। ফলে বিরক্তও হচ্ছে বন্যপ্রাণীরা। একে তো খাদ্যের অভাব, তার উপর এই সব উপদ্রবের জেরেই বন্যপ্রাণীরা বেশি করে লোকালয়ে বেরিয়ে পড়ছে। এবং যেটা কার্যত তাদের এখন স্বভাবে পরিণত হচ্ছে। খাদ্যের খোঁজে আশপাশের গ্রামে বা বনবস্তিতে ঢুকে পড়ছে হাতির দল। ফলে মানুষের সঙ্গে তাদের সংঘাত বাড়ছে। ঘটছে মৃত্যুর ঘটনাও।

এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে চাইলে, জঙ্গলকে তার আগের পরিবেশে ফিরিয়ে দিতে হবে। বন্যপ্রাণীদের খাদ্যের যাতে অভাব না হয়, সেজন্য উপযুক্ত গাছ বহু পরিমাণে জঙ্গলে লাগাতে হবে। জঙ্গলের ভিতরে গবাদি পশু চরানো বা মানুষের প্রবেশ কঠোর ভাবে বন্ধ করতে হবে। তবেই হয়তো বন্যপ্রাণীদের স্বভাব আবার বদলানো সম্ভব হবে। এটা একটা সুদীর্ঘ প্রক্রিয়া। তবু এটা না হলে আগামী দিনে বন্যপ্রাণীদের লোকালয়ে বেরিয়ে আসার প্রবণতা আরও বাড়তে থাকবে বলেই মনে হয়।

(অবসরপ্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

forest Elephant

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।