অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার সকালে দেহ নিয়ে পথ অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। — নিজস্ব চিত্র।
দ্বাদশ শ্রেণির এক কিশোরী ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে উত্তাল হল উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ। অভিযোগ, ছাত্রীটির পাশের গ্রামের এক যুবক-সহ কয়েক জন মিলে তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করেছেন। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার সকালে দেহ নিয়ে পথ অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। অবরোধ হটাতে গেলে ধুন্ধুমার বাধে কালিয়াগঞ্জে। পুলিশকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা ইটবৃষ্টি করেন বলে দাবি। অন্য দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার পাল্টা দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। জনতা-পুলিশে খণ্ডযুদ্ধে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বেশ কয়েক জনকে আটক করার পাশাপাশি ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশবাহিনী।
পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ থানার গঙ্গোয়ার পালইবাড়ি এলাকায় সকাল হতেই উত্তেজনা ছড়ায়। এক কিশোরীকে গণধর্ষণের পর খুনের অভিযোগ উঠেছে পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক যুবক এবং তাঁর ৪-৫ জন সঙ্গীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে এলাকার একটি পুকুর থেকে কিশোরীর দেহ উদ্ধারে পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষজন। দুপুরে সাহেবঘাটা রাজ্য সড়কে ছাত্রীর মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পরিবার ও স্থানীয়েরা। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে চলতে থাকে বিক্ষোভ।
স্থানীয়দের দাবি, ২০ তারিখে নিখোঁজ হয়েছিলেন কিশোরী। সে দিনই বিকেলে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী জ্ঞানেন্দ্র রায় এবং কালিয়াগঞ্জ থানার এসআই দীপঙ্কর দাসের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত তথা পাশের গ্রামের এক যুবক ও কিশোরীর পরিবার পক্ষ আলোচনায় বসে। কিশোরীর পরিবার মেয়েকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইলে অভিযুক্ত যুবকের পরিবার তা অস্বীকার করে বলে অভিযোগ। এর পর শুক্রবার সকালে ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়। এর পরেই ওই যুবক-সহ তাঁর সঙ্গীসাথীদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ করেছেন মৃতার পরিবার। তাদের অভিযোগ, শুক্রবার দুপুরে সাহেবঘাটা মোড়ে দেহ নিয়ে পথ অবরোধের সময় স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন জোর করে কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে পথ অবরোধ তুলে দেয়। এমনকি, কিশোরীর দেহ পরিবারের কাউকে না দিয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। অন্য দিকে, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশ অবরোধ মেটানোর চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। এর পর পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্টান গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস ছড়িয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টাও করে বলে অভিযোগ। দোষীদের শাস্তির দাবিতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি হয় কালিয়াগঞ্জে।
এই ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন উত্তর দিনাজপুর জেলার তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল, জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান শচীন সিংহ রায়, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়, ব্লক ও শহর সভাপতি নিতাই বৈশ্য, রাজীব সাহা, ব্লক তৃণমূল নেতা বাপ্পা সরকার-সহ শাসকদলের বহু নেতা। কানহাইয়ালাল বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের মতোই আমরাও ক্ষুব্ধ। এটা বরদাস্ত করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থানীয় বিধায়কদের নিয়ে আমরা এখানে এসেছি। দোষী ব্যক্তিদের যেন চরম শাস্তি হয়।’’ শুক্রবারই কালিয়াগঞ্জে যান বিজেপি বিধায়ক জোয়েল মুর্মু, চিন্ময় দেববর্মণ এবং সত্যেন্দ্রনাথ রায়। শনিবার ওই এলাকায় যাবেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy