চিতাবাঘের হানায় চা বাগানে এক কিশোরের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। ওই ঘটনাকে ঘিরে মঙ্গলবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় মাদারিহাটের রামঝোরা ও তুলসিপাড়া চা বাগানে। কিশোরের দেহের খোঁজ মেলার পরে বেলা সাড়ে দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত বীরপাড়া-লঙ্কাপাড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিক্ষোভের জেরে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় পৌঁছতেই পারেননি বনকর্মীরা। সেইসঙ্গে দিনভর চা বাগানের ঝোপেই পড়ে থাকে কিশোরের দেহটি।
মৃত ওই কিশোরের নাম রমন তিওয়ারি (১৬)। রামঝোরা বাগানের বাসিন্দা রমন রবিবার পাশের তুলসিপাড়া চা বাগানের একটি বাড়িতে দুধ দিতে যায়। সেখান থেকে আর ফেরেনি সে। রবিবার রাত পর্যন্ত অনেক খুঁজেও তাকে না পেয়ে রাতে রমনের বাড়ির লোকেরা বীরপাড়া থানায় অভিযোগ জানান। সোমবারও অবশ্য তার কোনও খোঁজ মেলেনি।
মঙ্গলবার বেলা ১০টা নাগাদ তুলসিপাড়া চা বাগানের শ্রমিকরা একটি ঝোপের মধ্যে এক কিশোরের মুণ্ডহীন দেহ দেখতে পান। দেহের একটি পা সেখান থেকে খানিকটা দূরে পড়েছিল। ঝোপটি তুলসিপাড়া চা বাগানের হলেও রামঝোরা ওই বাগানের সীমানায় অবস্থিত। দেহ মেলার খবর চাউর হতেই দলে দলে মানুষ সেখানে ভিড় করেন। দেহটি রমনের বলে দাবি করেন তার বাড়ির লোকেরাও। চিতাবাঘের হানাতেই রমনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ শুরু হয় অবরোধ। এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোয় সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় বনকর্মীদের দেখাই যায়নি। দিনভর দেহটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশও। রমনের বাবা চন্দ্রভূষণ তিওয়ারির অভিযোগ, ‘‘চিতাবাঘই আমার ছেলেকে মেরেছে। সেটা এড়িয়ে যেতেই বনকর্মীরা সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় আসেননি।’’ জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, ‘‘প্রাথমিক তথ্যে অন্য কারণে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছিল। তাই বনকর্মীরা শুরুতে যাননি। তবে মৃত্যু চিতাবাঘের হানাতেই হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে দেহের নমুনা পরীক্ষার জন্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, সন্ধ্যার পর ধীরে ধীরে বাসিন্দাদের বোঝানো সম্ভব হয়। রাত আটটা নাগাদ ঝোপে পড়ে থাকা কিশোরের দেহটি উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় রাতে জানান, এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পথ অবরোধও উঠে গিয়েছে।
গত বছর ডিসেম্বর মাস থেকে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত মাদারিহাটের বিভিন্ন চা বাগানে বারবার চিতাবাঘের হানার ঘটনা ঘটেছে। চিতাবাঘের হানায় ওই সময় দুই শিশু ও এক কিশোরের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। এক কিশোর ও এক বৃদ্ধকে জখমও হতে হয়। পরবর্তীতে খাঁচা পেতে বেশ কয়েকটি চিতাবাঘকে ধরে ফেলেন বনকর্মীরা। যার জেরে এলাকায় চিতাবাঘের আনাগোনা খানিকটা কমে যাওয়ায় আশ্বস্ত হয়েছিলেন সাধারণ মানুষও। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনা এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি নতুন করে চিন্তায় ফেলে দিল বন দফতরকেও।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy