Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

অবসাদে কি স্কুলে আত্মঘাতী হলেন শিক্ষক

স্কুলের মধ্যে শিক্ষকের আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম মহম্মদ রেকিব (২৬)।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০৬:১৪
Share: Save:

ছুটির পর সমস্ত পড়ুয়াকে লাইন করে দাঁড়াতে বলে প্রত্যেকের হাতে চকলেট তুলে দিয়ে বললেন, ‘‘ভাল ভাবে পড়াশোনা করিস।’’ উপহার পেয়ে খুশি পড়ুয়ারা বাড়ির পথ ধরল। ঘণ্টাখানেক পর ওই শিক্ষকের বাবা ছুটে আসেন স্কুলে। হইচই শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তালাবন্ধ স্কুলের অফিসঘরে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে তাঁরা দেখেন, অফিসঘরে ঝুলছে সেই শিক্ষকের দেহ। শনিবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কিশমত বোড়ল প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা।

স্কুলের মধ্যে শিক্ষকের আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম মহম্মদ রেকিব (২৬)। দু’বছর আগে চাকরি পেয়েছিলেন রেকিব। শারীরিক অসুস্থতার জন্য মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন রেকিব বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে। তার জেরেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। তবে ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ঘটনার জেরে এ দিন স্কুলেও শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, ‘‘ওই শিক্ষক মানসিক অবসাদেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত শিক্ষকের বাড়ি সালালপুর এলাকায়। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে-ই বড়। ছোটভাই বাংলাদেশে ডাক্তারি পড়েন। রেকিব যে স্কুলের শিক্ষক, সেখানে তিন শিক্ষক রয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বন্দন সাহা অসুস্থ হওয়ায় এ দিন স্কুলে যাননি। অন্যজন ছুটিতে আছেন। ফলে এ দিন একাই ছিলেন রেকিব। স্কুলে যাওয়ার আগেই তিনি লাগোয়া বাজার থেকে চকলেট কিনে নিয়ে যান বলে সূত্রের খবর।

পরিবার সূত্রের খবর, এ দিন স্কুল ছুটির পর প্রথমে রেকিব বাবাকেই প্রথমে ফোন করেন। কিন্তু তিনি ফোন না ধারায় বাংলাদেশে ভাইকে ফোন করেন। স্কুলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানিয়ে বাবা যেন স্কুলে আসেন, সে কথা ভাইকে বলেন। তারপরেই স্কুলে পৌঁছন বাবা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বন্দন সাহা বলেন, ‘‘ও কিছুদিন ধরেই টেনশনে ছিল। মাইগ্রেনের সমস্যার কথা বলত। ডাক্তারও দেখাচ্ছিল। গত বুধবার নিজের সার্ভিস বুক আপডেটও করিযেছিল। কিন্তু ও যে এমন করবে ভাবতেই পারছি না।’’

চাকরি পাওয়ার আগেই বিয়ে করেছিলেন রেকিব। তাঁর দুই নাবালক ছেলেমেয়েও রয়েছে। কিছুদিন ধরেই মাথাব্যথার সমস্যায় ভুগছিলেন রেকিব! ডাক্তারও দেখাচ্ছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে,তাহলে কি বড় ধরনের কোনও অসুখ কি ধরা পড়েছিল রেকিবের। যা তিনি জানাননি। তার সহকর্মী, পরিজনদের পাশাপাশি সেই প্রশ্নই উঁকি দিচ্ছে প্রত্যেকের মনে।

ঘটনার আকস্মিকতায় শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন স্ত্রী শামিমা খাতুন। বাবা সাগরে আলি কোনওক্রমে বলেন, ‘‘ছেলেটা কেন এমন করল কিছুই বুঝতে

পারছি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death Suicide School Teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy