রাস্তা সংকীর্ণ। বেড়ে চলেছে যানবাহনের সংখ্যা। আর সেই সঙ্গে ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে মাথাভাঙা শহরের যানজট সমস্যা। অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণহীন যানবাহনের দাপাদাপিতে নাজেহাল হয়ে পড়েছেন শহরবাসী। আরও অভিযোগ, মাথাভাঙা শহরে পার্কিংয়ের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে রাস্তার উপরেই যেখানে-সেখানে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে গাড়ি। সব থেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে শহরের মোরঙ্গা মোড় থেকে হাসপাতাল রোডের যানজটে। পচাগড় মোড় থেকে শহরের প্রধান চৌরাস্তা পর্যন্ত ‘আদর্শ পথ’ সংস্কার হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাথ দখলমুক্ত না হলে সে পথেও শহরের গতি থমকাবে বলে অভিযোগ।
মহকুমা ওই শহরে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অফিস। এ ছাড়াও আদালত, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল রয়েছে শহরে। দৈনিক গড়ে চল্লিশ হাজার মানুষ শহরে যাতায়াত করেন। স্বাভাবিক ভাবেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যাও। মাথাভাঙা শহরের শনিমন্দির মোড়, বাজার রোড, হসপিটাল রোড-সহ চৌপথি হয়ে পচাগর রোডে প্রতি দিন যানজট লেগে থাকে। মাঝেমধ্যে পুরসভা থেকে ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে অভিযান চালানো হলেও পরিস্থিতি বদলায় না। শহরের বাসিন্দা সৌরভ বর্মণ বলেন, ‘‘শহরের রাস্তায় এমনিতেই যানজট। তার মধ্যে বিভিন্ন রাস্তায় যে ভাবে ইট, বালি-সহ নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা হচ্ছে। তাতে সমস্যা বেড়েছে। পুলিশ ও পুরসভা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন বুঝতে পারছি না।’’ পুরপ্রধান লক্ষপতি প্রামাণিকের আশ্বাস ওই বিষয়ে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন গাড়ি-টোটো ট্রাফিক আইন না মানায় যানজটের সমস্যা বাড়ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’’
অভযোগ, শহরের যত্র তত্র অটো, টোটো, ব্যক্তিগত গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। তাতে পথ চলতে অসুবিধের মুখে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। মাথাভাঙা ট্রাফিক পুলিশ মাঝেমধ্যে ধরপাকড়ও করে। তাতেও পরিস্থিতি পাল্টায় না। টোটোচালক শ্যামল সরকারের বলেন, “মাথাভাঙা পুরসভা সপ্তাহে চার দিন ১০ টাকা করে মাসুল সংগ্রহ করলেও শহরে টোটোস্ট্যান্ড নেই।’’ মাথাভাঙা ট্রাফিক ওসি তেনজিং গেলসন ভুটিয়া বলেন, “যানজট কমানোর জন্য অভিযান হচ্ছে। তবে পার্কিং জোন না হওয়া পর্যন্ত সমাধান কঠিন।’’ তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কোচবিহার জেলা সম্পাদক আলিজার রহমান বলেন, ‘‘যানজট সমস্যা সমাধানে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে চালকদের স্বার্থ রক্ষা করে সমাধান খোঁজা হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)