বাংলাদেশ থেকে চলে আসা পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
কোটা সংরক্ষণ আন্দোলনে উত্তপ্ত বাংলাদেশ ছেড়ে চলে আসছেন ভিন্দেশের পড়ুয়ারা। শুক্রবারই কোচবিহারের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মেখলিগঞ্জ গেট দিয়ে বাংলাদেশের রংপুর মেডিক্যাল কলেজের ৩৩ জন পড়ুয়া ভারতের প্রবেশ করেন। সে দেশে খারাপ পরিস্থিতির জন্য ফুলবাড়ি সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে ফিরলেন আরও কয়েক জন পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে ভারতের বাসিন্দা যেমন আছেন, তেমনই রয়েছেন নেপাল এবং ভুটানের বাসিন্দাও। এ ছাড়া বেশ কয়েক জন পর্যটক বাংলাদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। তাঁরা বিস্তারিত ভাবে কিছু বলতে রাজি না হলেও সংক্ষিপ্ত ভাবে সবাই বলছেন, ‘পরিস্থিতি ভয়াবহ’। দেশে ফেরা এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘এক প্রকার জীবন বাজি রেখে প্রধান সড়কগুলোকে পাশ কাটিয়ে গ্রামের রাস্তা ধরে কোনও প্রকারে সীমান্তে এসে পৌঁছেছি আমরা।’’
বাংলাদেশে পড়তে গিয়েছিলেন নেপালের বাসিন্দা নরেন ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘‘মূলত ঢাকায় আন্দোলন বেশি হচ্ছে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া গত কাল তো কার্ফু জারি হয়েছে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘ছাত্র আন্দোলন এতটাই বড় আকার ধারণ করেছে যে, সেখানে থাকা নিরাপদ বলে মনে হয়নি আমাদের। তাই বাড়িতে ফিরে এলাম। নিজেরা গাড়ি ভাড়া করে প্রধান সড়ক ছেড়ে গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে এসেছি।’’ একই কথা জানিয়েছেন অস্মিতা কার্কি নামে এক জন পড়ুয়াও। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলন মূলত শহরগুলোতে হচ্ছে। তবে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। মা-বাবার সঙ্গে গত কয়েক দিন যোগাযোগ করতে পারিনি। মা-বাবা খুব চিন্তায় রয়েছেন জানি। তাই দেশে ফিরে এলাম।’’ তিনি জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের গাড়ি আটকে দেওয়া হচ্ছিল। টাকা দিয়ে তবেই রেহাই মিলেছে।
এ দেশ থেকে এক পরিচিতের বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন বলরাম চন্দ্র বর্মণ। তিনি বলেন, ‘‘বন্ধুর বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। গ্রামের বাইরে বার হওয়া যাচ্ছে না। সমস্ত যান চলাচল বন্ধ। এক জনকে অনুরোধ করে কোনও ক্রমে তাঁর বাইকে করে সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছেছিলাম।’’
চিকিৎসার কারণে ভারতে আসা বাংলাদেশের বাসিন্দা মহম্মদ কামালউদ্দিন বলেন, ‘‘চিকিৎসার কারণে ভারতে এসেছিলাম। কিন্তু সময়ের আগেই দেশে ফিরতে হচ্ছে। একরাশ উৎকণ্ঠা নিয়ে ফিরছি। পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারছি না। কী যে হচ্ছে, কিছুই জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy