Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Bhutni

ক্লাসে ঝুলছে জামা, পড়া বারান্দায়

এমনই ছবি মালদহের ভুতনি থানার ছবিপণ্ডিত টোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

অনিয়ম: বারান্দায় পঠনপাঠন(উপরে)। ক্লাসঘরে ঝুলছে শ্রমিকদের পোশাক। ভুতনির প্রাথমিক স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

অনিয়ম: বারান্দায় পঠনপাঠন(উপরে)। ক্লাসঘরে ঝুলছে শ্রমিকদের পোশাক। ভুতনির প্রাথমিক স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা
ভুতনি শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০১:১৯
Share: Save:

ক্লাসঘরের এক দিকে টাঙানো মশারি, অন্য দিকে টেবিল পেতে চলছে খাওয়া-দাওয়া। ক্লাসঘরে থাকছেন নদী-ভাঙন মোকাবিলার কাজে নিযুক্ত শ্রমিকেরা। অভিযোগ, তার জেরে স্কুলের বারান্দায় চলছে পড়ুয়াদের পঠনপাঠন।

এমনই ছবি মালদহের ভুতনি থানার ছবিপণ্ডিত টোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পড়ুয়াদের ক্লাসঘর ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের থাকার জন্য দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। ওই খবরে অস্বস্তিতে জেলার শিক্ষা দফতরের কর্তারাও।

ভুতনি থানার হিরানন্দপুর গ্রামপঞ্চায়েতে ছবিপণ্ডিত টোলা গ্রাম। ওই গ্রামে সেচ দফতরের তরফে বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই কাজ করছেন বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। শতাধিক শ্রমিক বাঁধ মেরামতের কাজে যুক্ত রয়েছেন। অভিযোগ, শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ছবিপণ্ডিত টোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলের মাঠে মজুত করে রাখা হয়েছে লোহার তার। চাটাই দিয়ে মাঠের মধ্যে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের চারটি ক্লাসঘরেই থাকছেন শ্রমিকেরা।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে ১৯৬ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তিন জন শিক্ষক। গ্রামবাসীদের দাবি, গ্রামের ছেলেমেয়েরা পঠন-পাঠনের জন্য ওই প্রাথমিক স্কুলের উপরেই নির্ভরশীল। অভিযোগ, মাসখানেক ধরে স্কুলের ‘দখল’ কার্যত শ্রমিকেরা নেওয়ায় হাজিরা কমছে পড়ুয়াদের। স্কুল ভবন শ্রমিকদের থাকার জন্য দেওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক মহল। তাঁদের দাবি, টাকার বিনিয়মে স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার সংস্থাকে ক্লাসঘর ছেড়ে দিয়েছেন।

পুরোন মণ্ডল, জবা মাহাতো, গোপাল রবিদাসের নালিশ, ‘‘ক্লাসে ঘুমিয়ে থাকছেন শ্রমিকেরা। সেখানেই টেবিল পেতে খাওয়া-দাওয়া করছেন। ছেলেমেয়েদের বসতে হচ্ছে বারান্দায়। তাতে পড়াশোনা ঠিক মতো হচ্ছে না।’’ তাঁদের প্রশ্ন, গ্রামে অনেক ফাঁকা জমি রয়েছে, শ্রমিকদের জন্য সেখানে অস্থায়ী ভাবে ঘর তৈরি হল না কেন?

শ্রমিকদের একাংশ জানিয়েছেন, সংস্থার নির্দেশ পেলে স্কুলঘর ছেড়ে দেবেন।

স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, ‘‘টাকার বিনিয়মে শ্রেণিকক্ষ দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। গ্রামেরই কয়েক জন এসে জানিয়েছিলেন কয়েক দিনের জন্য শ্রমিকেরা থাকবেন। তাই ক্লাসঘর দেওয়া হয়েছিল।’’

বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) সুনীতি সাঁপুই। তিনি বলেন, ‘‘মানিকচকের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ভাবে স্কুলভবনে যে কেউ থাকতে পারেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bhutni Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE