প্রশ্নে নিরাপত্তা: সেতুতে নজরদারির গাফিলতির অভিযোগ উঠল।
প্রায় ১০০ বছর হওয়ার মুখে হেরিটেজ সেবকের করোনেশন সেতু। একাধিক সীমান্তবর্তী অঞ্চলের এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি জাতীয় নিরাপত্তারও তালিকাভুক্ত। বৃহস্পতিবার সেখানে পুলিশ-প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে সেতুর দু’পাশে চলে শুটিং। অভিযোগ, গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যার ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই সরব বিভিন্ন মহল। পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কী ভাবে সেবকের মতো সেতুতে এমন কাজ হল তা জানতে চেয়েছে নবান্নও। এ দিন সন্ধ্যায় নবান্নের শীর্ষ মহল থেকে ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ বন্দোবস্তের দাবি তোলা হয়েছে।
বিশেষ করে, দিনে দুপুরে সকলের নাকের ডগায় এমন করা গেলে অন্য সময় তো অনেক কিছুই হতে পারে। বিভিন্ন সংগঠনের সক্রিয়তার মাঝে এমন একটি সেতুর ঢিলেঢালা নজরদারি নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক কর্তার কথায়, ‘‘ঘটনার জেরে পরিষ্কার যে, সেতুতে নজরদারি ঠিকঠাক ছিল না। তা দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শিলিগুড়ি শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সেবক করোনেশন সেতু ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম জর্জের করোনেশন (রাজ্যাভিষেক) উপলক্ষে রোমান স্থাপত্যে গড়ে তোলা হয়। ১৯২৭ সালে তৈরি সেবকের এই সেতুর নির্মাণশৈলী অন্য সেতুর থেকে আলাদা। খরস্রোতা তিস্তা নদীর উপর তৈরি সেতুটি দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলাকে জুড়ে দেয়। সেতুর আর এক পাশে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সিকিম এবং কালিম্পং যায়। চিন এবং ডুয়ার্সের ভুটান সীমান্তের জন্য সামরিক দিক দিয়ে এই সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত সামরিক গাড়ি সেতু দিয়ে চলাচল করে। অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, সেতুর ক্ষতি হলে তা দেশের নিরাপত্তা ক্ষেত্রেও চিন্তায় বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
বিশেষ করে, গত কয়েক বছরে সেতুতে ফাটলও ধরা পড়ায় চিন্তা বেড়েছে। তাতে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কয়েক বছর আগে এক মহিলা সেতু থেকে নিচে লাফও দিয়েছিলেন। তার পরেও সেতুতে নজরদারি ঠিক ছিল না আবার প্রমাণ হল। সেবকে বিকল্প সেতুর দাবি তোলা ডুয়ার্স ফোরামের কর্মকর্তা চন্দন রায় শনিবার সেবক পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সেবক করোনেশন সেতু যে দূর্বল তা প্রশাসন জানে। তার পরেও এ সব পুলিশ-প্রশাসনের সামনেই হচ্ছে। আগামী শনিবার সেবক ফাড়ি ঘেরাও করা হবে।’’
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্ট লিগাল এড ফোরামের সচিব অমিত সরকার। তিনি বলেন, ‘‘শুধু জিজ্ঞাসাবাদ বা মামলা করে লাভ হবে না। এসব ক্ষেত্রে গ্রেফতার করতে হবে।’’
এই সেতু দিয়ে ডুয়ার্স এবং পাহাড়ে নিজের বাড়ির এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত করেন শহরের চিকিৎসক প্রেম দোরজি ভুটিয়া। তিনি বলেন, ‘‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন। তা না হলে তো যে কেউ আমাদের হেরিটেজ সম্পত্তিকে নষ্ট করে দিতে পারে। পুলিশের নজরদারিও বাড়ানো প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy