Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

কার আশ্রয়, কার ফেরা, সতর্ক প্রশাসন

নমনি অসমের অবস্থাও প্রায় একইরকম। তাতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বাসিন্দাদের একটি বড়। সেখানকার অনেকেরই আত্মীয়স্বজন রয়েছেন অসম সীমানা লাগোয়া জেলা কোচবিহারে। ইতিমধ্যেই তাঁদের কেউ কেউ ফোনে যোগাযোগ রাখছেন। কেউ সুযোগ পেলেই জেলায় ফিরবেন বলে জানিয়েছেন। আর অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে, তাতে শুধু ফেরা নয়, অসমের বাসিন্দাদের একটি অংশ আতঙ্কে আশ্রয় নিতে পারেন কোচবিহারে। সেটা আঁচ করতে পারছেন জেলা পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা। 

নিশানা: বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছেন আধা-সামরিক বাহিনীর এক জওয়ান। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে। এএফপি

নিশানা: বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছেন আধা-সামরিক বাহিনীর এক জওয়ান। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে। এএফপি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৫২
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন। এবার বাঙালিদের আশ্রয় দেওয়ার কথা স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দিলেন শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরাও।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর থেকে অসম জুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিক্ষোভ। নমনি অসমের অবস্থাও প্রায় একইরকম। তাতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বাসিন্দাদের একটি বড়। সেখানকার অনেকেরই আত্মীয়স্বজন রয়েছেন অসম সীমানা লাগোয়া জেলা কোচবিহারে। ইতিমধ্যেই তাঁদের কেউ কেউ ফোনে যোগাযোগ রাখছেন। কেউ সুযোগ পেলেই জেলায় ফিরবেন বলে জানিয়েছেন। আর অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে, তাতে শুধু ফেরা নয়, অসমের বাসিন্দাদের একটি অংশ আতঙ্কে আশ্রয় নিতে পারেন কোচবিহারে। সেটা আঁচ করতে পারছেন জেলা পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ইতিমধ্যেই খবর এসে পৌঁছেছে, অসম থেকে ইতিমধ্যেই কিছু পরিবার কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে চলে এসেছে। ওই সংখ্যা বাড়তে শুরু করলে মাঠে নামতে হবে প্রশাসনকে। রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “পরিস্থিতির দিকে আমাদের নজর রয়েছে। তেমন হলে কেউ জেলায় ঢুকলে অবশ্যই আশ্রয় দেওয়া হবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, ওই বিষয়টি পুরোপুরি প্রশাসন দেখছে। এ ব্যাপারে জানতে কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়নকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রশাসন সূত্রের অবশ্য খবর, অসম সীমানা লাগোয়া তুফানগঞ্জ মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের দফায় দফায় ওই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশও অসমে সীমানায় নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর এ দিন বলেন, “সীমানা এলাকায় নজরদারি চলছে।”

অসমের নাগরিক পঞ্জির সময় থেকেই উত্তেজনা ছড়াতে শুরু করে। সেই সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, অসমে কোনও বাঙালি আশ্রয়হীন হলে তাঁকে আশ্রয় দেবে বাংলা। শুধু বাঙালিদেরই নয়, তিনি সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকেই আশ্রয় দেওয়ার কথা জানান। সেই সময় একাধিক ত্রাণ শিবির দেখতে শুরু করে প্রশাসন। সীমানা এলাকায় যে সমস্ত জায়গায় বন্যা হলে বাসিন্দারা আশ্রয় নেন, সেগুলিও দেখে রাখা হয়। এ ছাড়া বন্যার সময় স্কুল, গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের জায়গায়ও দেখে রাখা হয়। এবারেও তেমনটা হলে এমন জায়গাতেই আশ্রয় দেওয়া হবে বাসিন্দাদের। ইতিমধ্যেই অসমে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। একাধিক ট্রেন বাতিল হয়েছে। ইতিমধ্যেই তার একটা বড় প্রভাব পড়েছে কোচবিহারে।

নমনি অসমের একটি বড় অংশের মানুষ কোচবিহারের উপর নির্ভরশীল। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ অসম থেকে কোচবিহারে বিভিন্ন কাজে যাতায়াত করেন। এখন কার্যত যাতায়াত একেবারেই বন্ধ। ব্যবসার উপরে বড়সড় প্রভাব পড়েছে। সেদিকেও নজর রাখছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “অসম লাগোয়া জেলা কোচবিহার। স্বাভাবিক ভাবেই কিছু আঁচ পড়বে। তাতে যাতে কোনও মানুষের ক্ষতি না হয়, সেইদিকেই লক্ষ রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

NRC CAB Coochbehar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy