বিমল গুরুং। ফাইল চিত্র।
পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচনে আপত্তি তুলে বেসুরো হতেই বিমল গুরুংয়ের মোর্চাকে নতুন করে পাশে পেতে চাইছে বিজেপি'র একাংশ। প্রকাশ্যে বা মুখে না বললেও গুরুং-ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন এলাকার নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে খবর। মোর্চা সূত্রের খবর, বিমল গুরুংয়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ট প্রাক্তন মোর্চা তথা বর্তমানে বিজেপিতে থাকা এক পাহাড়ের নেতা ওই যোগযোগ শুরু করেছেন বলে খবর। তিনি জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী অন্তত চারজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে দুই দলকে আবার এক মঞ্চে নিয়ে আসতে প্রাথমিক স্তরে কথাবার্তা বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও এই নিয়ে বিজেপির তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আর জনমুক্তি মোর্চার সচিব রোশন গিরি এমন যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছেন। রোশনের কথায়, ‘‘এমন কোনও ব্যাপারই নেই। বিজেপির সঙ্গে কোনও কথা নেই। পাহাড় সমস্যার খসড়া রিপোর্ট নিয়ে আমরা ব্যস্ত আছি। রাজ্যের সঙ্গেই আমরা কথা বলব।’’ তবে কয়েকদিন আগেই বিমল গুরুংয়ের প্রশংসা করেছিলেন দার্জিলিঙের বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বা। তিনি বলেছেন, ‘‘গুরুং জিটিএ ভোটের বিরোধিতা করছেন। আমরাও তাই বলছি। এটা ভাল দিক। যিনি (গুরুং) জিটিএ তৈরি করেছিলেন, তিনিই এর বিপক্ষে।’’
২০০৯ থেকে ২০২০ সাল অবধি বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে পাহাড়ে জোট করেই এগিয়েছে বিজেপি। যশোবন্ত সিংহ, সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া থেকে বর্তমানে রাজু বিস্তা বিমলের সমর্থনে বিপুল ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছেন। তাল কেটেছিল ২০১৭ সালে। পাহাড়ে আন্দোলন শুরু করে শেষে রাশ ধরে রাখতে না পেরে দার্জিলিং-ছাড়া হন গুরুং। সাড়ে চার বছর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করে পাহাড়ে ফেরেন। কিন্তু ততদিনে তাঁর দল দুই টুকরো হয়ে গিয়েছে। তাঁর দল গত বিধানসভা এবং দার্জিলিং পুরভোটে গুরুং দাগ কাটতে পারেননি। উল্টে দুই মোর্চার ভোট কাটাকাটিতে বিজেপি দুই বিধায়ক পায়। আর একই কারণে দার্জিলিং পুরসভায় জেতে হামরো পার্টি।
এই অবস্থায় সংগঠনের হাল নীচের দিকে যেতেই পাহাড় সফর শুরু করেছেন গুরুং। নতুন করে জনসংযোগ করছেন। ছোট ছোট জনসভা করছেন। জিটিএ ভোট হলে তিনি আমরণ অনশনে বসার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফর চলাকালীন গুরুংয়ের এই অবস্থান নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। হঠাৎ করে তিনি কেন বেসুরো হচ্ছেন, তার খোঁজ শুরু করেছে শাসক দলও। এই সময় পুরনো ‘বন্ধু’ গুরুংকে নতুন করে পাশে পেতে চাইছে বিজেপি। তবে মোর্চার এক নেতার কথায়, ‘‘গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-সহ নানা মামলা রয়েছে। রাজ্য অনেক মামলা বন্ধ করেছে। এখন রাজ্যের বিরুদ্ধে গেলে গুরুং-সহ মোর্চার কী হবে, সেটাই বড় প্রশ্ন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy