স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা গুলেনুর বেগম। —নিজস্ব চিত্র।
পণের দাবি আদায়ের জন্য বধূকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে ওই বধূকে প্রাণে বাঁচালেন বধূর পরিবারের সদস্য-সহ গ্রামবাসীরা। স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বধূ। এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকেই পলাতক তাঁর স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়ি।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বাসিন্দা সইফ আলি খানের স্ত্রী গুলেনুর বেগমের দাবি, বিয়েতে ৪ লক্ষ টাকা-সহ বিপুল পরিমাণ গয়নার দাবি মেটানোর পরেও শ্বশুরবাড়ির চাহিদার অন্ত নেই। গত দু’বছরে তা-ও মেটানোর চেষ্টা করেছে তাঁর পরিবার৷ কিন্তু শ্বশুরবাড়ির দাবি মেটেনি৷ সেই দাবি আদায়ে তাঁকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মঙ্গলবার পরিবার ও গ্রামবাসীদের চেষ্টায় প্রাণে বাঁচেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, গুলেনুর বেগমকে প্রথমে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি৷ মঙ্গলবার ফাঁসিদেওয়া থানায় বধূর স্বামী ছাড়াও শ্বশুর এমডি দুলাল এবং শ্বাশুড়ি ফতেমা খাতুনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বধূ। দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, শিলিগুড়ি শালবাড়ি এলাকার বাসিন্দা গুলেনুর বেগমের সঙ্গে বছর দুয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল সইফের। বধূর পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। গুলেনুরের অভিযোগ, ‘‘শুধুমাত্র আমার স্বামী নন, শ্বশুর-শ্বাশুড়িও অত্যাচার শুরু করেন৷ বিয়ের সময় নগদ ৪ লক্ষ টাকা-সহ প্রচুর সোনার গয়না দেওয়া হয়েছে। এর পর আমার বাপেরবাড়ির থেকে বহু বার টাকার দাবি মেটানো হয়৷ তার পরও অত্যাচার থামেনি৷ অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে বেশ কয়েক দিন বাপেরবাড়ি গিয়ে কাটানোর পর গত কাল (সোমবার) রাতে শ্বশুরবাড়ি যেতেই শুরু হয় মারধর। ছোট বাচ্চাটিকেও বাদ রাখেনি৷ আমার পাশাপাশি তাকেও পুড়িয়ে মারার চেষ্টা চালানো হয়। এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকেরা খবর পেয়ে আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান৷ দোষীদের শাস্তি চাই।’’
গুলেনুরের অভিযোগ সত্য বলে জানিয়েছেন এলাকার এক বাসিন্দা মহম্মদ নুর ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দোষীদের কঠোরতম শাস্তি চাই। যাতে আর কোনও মেয়ের যেন এমন সর্বনাশ না হয়। বিয়ের পর থেকেই এই পরিবারে অশান্তি নিত্যদিনের সঙ্গী। গুলেনুরকে মারধর লেগেই রয়েছে। এ বার তো পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল। আমরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই৷’’ গুলেনুরের ভাই মহম্মদ আয়ুব বলেন, ‘‘সন্ধ্যা নাগাদ দিদিকে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিলাম। ফেরার পথেই শুনি তাঁকে ঘরে আটকে আগুন ধরিয়ে দিতে চাইছে। সেখান থেকে দিদিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সব সময় অত্যাচার চলত। অনেক টাকাও দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু দিদির শ্বশুরবাড়ির দাবি বেড়েই চলেছে৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy