গোল্লাছুট: সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাতে গণ্ডি দেখা যাচ্ছে শিলিগুড়ির বেশ কিছু বাজারে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
যত দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে কালোবাজারির অভিযোগ। সাধারণ মানুষের দাবি, একসঙ্গে অনেকটা দাম না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে বেশি দাম নেওয়া শুরু করেছে দোকানিদের একাংশ। ছোট ব্যবসায়ীদের আবার দাবি, তাঁদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে বলে দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই অনেকক্ষেত্রেই। খুচরা ব্যবসায়ী সমিতি তো বটেই, বিষয়টি নিয়ে অবগত রয়েছে পাইকারি ব্যবসায়ী সংগঠনও। এই নিয়ে তাঁরা মহকুমাশাসককে বৈঠক ডাকতেও অনুরোধ করেছেন। প্রশাসনের তরফে বক্তব্য, তারা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করছে। সচেতনতা র প্রচারও করছে। এর পরে কেউ আইন ভাঙলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায়।
কী ভাবে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম? স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জিনিস পিছু কেজি দরে ১ বা ২ টাকা করে ধীরে ধীরে দাম বাড়ানো হচ্ছে। এক সময় তা কেজি প্রতি ১০ টাকা অবধি বেড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে খুচরো ব্যবসায়ীরা পাইকারদের উপরে দায় চাপাচ্ছেন বলে অভিযোগ। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, রবীন্দ্রনগর, সুভাষপল্লি এলাকার বাজারগুলি থেকে শুরু করে হায়দারপাড়া, চম্পাসারি, ঝংকার মোড়, গেটবাজার, বিধান মার্কেটের কোথাও কোথাও সুযোগ পেলেই ব্যবসায়ীদের একাংশ বেশি দাম নিচ্ছে বলে অভিযোগ।
অভিযোগ সম্পর্কে সচেতন শিলিগুড়ির খুচরো ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রায় মুহুরিও। পাইকারি বাজারের কথাও বলছেন খুচরো ব্যবসায়ীরা। বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘আমরা নজর রাখছি। খালপাড়া বাজার থেকে এ রকম অভিযোগ ওঠার পরে সেখানে গিয়েছিলাম।’’ তাঁদের দাবি, শিশুদের খাবার এবং বিস্কুটের গাড়ি আসছে না। খুচরো ব্যবসায়ীদের থেকেও বিলের বাইরে কিছু বেশি টাকা নিচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে মহকুমাশাসককে একটি বৈঠক ডাকতে বলেছি। নিজেরাও নজর রাখছি। নির্দিষ্টভাবে জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।’’ যদিও বিলের বাইরে যে সব পাইকার টাকা নিচ্ছেন, তাঁদের কেন সংগঠন চিহ্নিত করতে পারছে না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। ছোট এবং খুচরো ব্যবসায়ীদের যুক্তি, বেশিরভাগ ছোট ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট কিছু পাইকারি দোকান থেকেই মালপত্র নেন। টাকা বেশি লাগছে বলে তাঁদের নাম বলা হলে, ওই পাইকারেরা মালপত্র দেওয়া বন্ধ করে দিতে পারেন। তাই প্রশাসনের উচিত কালোবাজারি রুখতে নিজেরাই পাইকারি এবং খুচরো বাজারগুলিতে হানা দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।
বাসিন্দারা জানান, ইতিমধ্যে আলু, পেঁয়াজের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে কেজি প্রতি ২-৫ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তেল, চালের ক্ষেত্রেও কুইন্ট্যাল প্রতি ৫০ থেকে ২০০ টাকা অবধি সুযোগ পেলেই বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ডিমের ক্ষেত্রেও তাই চলছে। দুধের প্যাকেটে ১-২ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে। শুধু কি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, পুর এলাকার বর্ধমান রোড লাগোয়া বিদ্যাসাগর রোডে একটি স্টেশনারি দোকানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রিপেড মোবাইলের রিচার্জের প্রতিটি টাকার অঙ্কের সঙ্গে দোকানদার ২০-২৫ টাকা বেশি দাবি করছেন।
সমস্ত অভিযোগই পৌঁছচ্ছে শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায়ের কাছে। বিশেষ কন্ট্রোল রুমে বাসিন্দারা ফোনও করছেন। সেখান থেকে প্রশাসনের বিশেষ টিম এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে। ব্যবসায়ীদের এখনও সতর্ক করা হচ্ছে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকেই নয়াবাজার, চম্পাসারি পাইকারি বাজারগুলিতে একটি দুটি নয়, একাধিক দামের তালিকার ফ্লেক্স ঝোলাতে বলা হয়েছে। পাইকারি বাজারের সচিব দরগুলি যাচাই করে নেবেন।’’ তিনি জানান, ‘‘আমরা সতর্ক হতে বলছি। কাজ না হলে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy