জৈব, অজৈব বর্জ্য আলাদা করে না সংগ্রহ করায় শিলিগুড়ি পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ব্যাহত হচ্ছে বর্জ্য থেকে সার তৈরির কাজ। ‘স্টেট আর্বন ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’র (সুডা) নিয়ম অনুযায়ী জৈব এবং অজৈব বর্জ্য আলাদা করে না পাওয়ায় ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে কাজের বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা মেশানো বর্জ্য নিচ্ছে না। তাতে প্রতিদিন সংগ্রহ করা আবর্জনার স্তূপ জমছে। ডাম্পিং গ্রাউন্ডে কয়েক দশকের জমে থাকা আবর্জনা নষ্ট করে পরিষ্কার করার কাজ চলছে। কিন্তু অন্য দিকে আবর্জনা জমতে থাকলে ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে না বলে উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ।
‘শূন্য বর্জ্য’ প্রকল্পে প্রতিদিনের বর্জ্য থেকে সার তৈরি এবং বাকি বর্জ্য অন্য কাজে ব্যবহার করার কথা। কিন্তু বিভিন্ন বাজার থেকে সংগ্রহ করা জৈব ও অজৈব বর্জ্য মিশে থাকায় বেশি সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। সমস্যা মেটাতে বুধবার শিলিগুড়ি শহরের বাজারগুলির কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পুরসভায় বৈঠক করেন মেয়র গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘বাজার কমিটিগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তাদের আলাদা করে বর্জ্য ফেলার জন্য বলা হয়েছে। শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের বর্জ্য সাফাই নিয়েও কথা হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘দীর্ঘদিনের জমে থাকা বর্জ্যের পাহাড় পরিষ্কার করা হচ্ছে। সেটি ঠিক রাখতেই হবে।’’
বৃহত্তর শিলিগুড়ি খুচরো ব্যবসায়ী সমিতি সম্পাদক বিপ্লব রায়মহুরী জানান, বাজার কমিটিগুলির পক্ষে আলাদা করে বর্জ্য ফেলার বিষয়টি দেখা হবে। পুরসভার কাছে কিছু প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সমস্ত রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত। সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ মানিক দে জানান, বাজারগুলিতে আবর্জনা ফেলার বড় গাড়ি দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে বর্জ্য আলাদা করতে বাজারে মাঝেমাঝে বড় পাত্র রাখারও ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সমিতিকে।
এ দিনের বৈঠকে মেয়র ছাড়া ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ, বাজারগুলির দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ রামভজন মাহাতো ছিলেন। পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক ৩৫০ মেট্রিক টনের মতো বর্জ্য শহরে উৎপন্ন হয়। তার মধ্যে প্রায় অর্ধেক বাজারগুলি থেকেই আসে। বাকি বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা এবং অন্য ভাবে উৎপন্ন হয়। বাজার থেকে জৈব, অজৈব বর্জ্য আলাদা না করায় সমস্যা বেড়েছে বলে অভিযোগ। তা ছাড়া অনেক ওয়ার্ডেও জৈব, অজৈব আবর্জনা আলাদা করে ফেলা হচ্ছে না।
শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা বর্জ্য আলাদা করবেন না কারবার সামলাবেন। অনেকেই সেই সমস্যার কথা আমাকে জানিয়েছেন। পুরসভার তরফেই ব্যবস্থা
করা দরকার।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)