ফি বছর একই সমস্যা হচ্ছে। সন্ধ্যের পরে মাঝেমধ্যেই ধোঁয়ায় ঢাকছে শিলিগুড়ি শহর। মঙ্গলবার রাত বাড়তেই সেই সমস্যা ফের বাড়তে থাকে। রাতভর ধোঁয়ায় মুড়ে ছিল শহর। বুধবার সকালেও বিভিন্ন এলাকায় ধোঁয়া ছিল। এ দিন রাতেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় একই অবস্থা ছিল। অভিযোগ, ধোঁয়ার জেরে চোখ জ্বালা থেকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। প্রতি বছর এমন পরিস্থিতি তৈরি হলেও পুরসভা, প্রশাসনের তরফে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। এ দিনও গজলডোবার কাছে জঙ্গলে আগুন লাগে। পরে তা দমকল নিয়ন্ত্রণ করে।
মেয়র গৌতম দেবের কথা, “বন দফতর ও দমকলের সঙ্গে কথা হয়েছে। গত বছরও তাদের বলা হয়েছিল। তারা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে। ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আবর্জনায় যাতে আগুন না লাগে, সেই বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।” তাঁর সংযোজন, ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নজরদারির জন্য ‘ক্লোজ়ড সার্কিট’ ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
বন দফতরের দাবি, তারাও বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঠেকাতে চেষ্টা করছেন। কার্শিয়াং ডিভিশনের তরফে হেল্পলাইন নম্বর প্রতিটি রেঞ্জে চালু করা হয়েছে। ডিএফও দেবেশ পাণ্ডে বলেন, “কোথাও জঙ্গলে আগুন লাগলে তা হেল্পলাইন নম্বরে জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও আগুনের মোকাবিলায় সচেতনতার জন্যও বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
তাতে অবশ্য সমস্যা মেটেনি। কয়েক বছর ধরে মার্চ-এপ্রিল মাসে এমন ধোঁয়ায় শহরের দূষণ বাড়ছে বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ি লাগোয়া সমতল ও পাহাড় এলাকায় জঙ্গলে আগুনের জন্যই এই ধোঁয়া হচ্ছে বলে পরিবেশপ্রেমীদের অনেকের দাবি। ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বর্জ্যের তলায় চাপা পড়ে থাকা মিথেন গ্যাসও ধিকধিক করে জ্বলছে। এ সময় হাওয়া দিলে তা থেকেই অনেক সময়ই আগুন বড় আকার নেয়। আবর্জনায় আগুন থেকেও শহরের কিছু এলাকায় ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে।
গত মঙ্গলবার শিলিগুড়ির কাছে রোহিনী জঙ্গল, কার্শিয়াঙের লং ভিউ চা বাগান, বৈকুণ্ঠপুর ডিভিশনের শারুগারার কাছে জঙ্গলে একাধিক জায়গায় আগুন লাগে। লং ভিউ চা বাগান থেকে আগুন প্রায় ১৫০ একর জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। রোহিনীর বিস্তীর্ণ এলাকাও আগুনে পুড়েছে। সেখান থেকেই ধোঁয়া শহরে ঢুকেছে বলে অভিযোগ।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ধোঁয়ার জেরে ছোট থেকে বড় অনেকের চোখে জ্বালা-সহ, শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়েছে। ফুসফুস সংক্রান্ত রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অভিষেক বালির কথায়, “খুবই উদ্বেগের বিষয়। এই ধরনের ধোঁয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। পুরসভা, প্রশাসনের তরফে গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।’’