আগামী মাস থেকে শিলিগুড়ি শহরের পার্কিং ফি এক লাফে দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেই মতো বাইক, স্কুটারের মতো দু’চাকার গাড়ি পার্কিং করতে ঘণ্টায় ৫ টাকা এবং চার চাকার গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ১০ টাকা করে দিতে হবে। এখন তা রয়েছে ২ টাকা এবং ৫ টাকা।
গত ২৩ জুন শহরে পুরসভার বিভিন্ন পার্কিং জোনের দায়িত্ব দিতে টেন্ডার ডেকে ‘টেবল বিড’ করে বিভিন্ন সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। তাদের লিখিত ভাবে সেই চিঠি দিয়ে দেওয়া হবে। তবে টেবল বিড শুরুর আগে পুর আধিকারিকরা অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারদের মৌখিক ভাবে জানিয়েও দেন যাঁরা বরাত পাবেন তাঁরা বর্ধিত হারে ফি নিতে পারবেন। সেই ভাবে বরাতে দর দিতে। জুলাই মাস থেকে তা একধাপে দ্বিগুন বা তারও বেশি পার্কিং ফি বাড়ানো নিয়ে বিরোধী তৃণমূল এবং কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাজেটের পরে নতুন হারে পার্কিং ফি লাগু করা হবে।’’
এর আগেও পুরসভা মিউটেশন ফি বাড়ালে আন্দোলনে নেমেছিল বিরোধী তৃণমূল। তবে তাতে পুরসভার সিদ্ধান্ত বদলায়নি। এ দিন পর্যটন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের অন্যতম জেলা নেতা গৌতম দেব বলেন, ‘‘দলের সঙ্গে কথা বলব। এ নিয়ে আমরা অবশ্যই আন্দোলনে নামব।’’
জেলার অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে মদন ভট্টাচার্য, যুব তৃণমূলের সভাপতি বিকাশ সরকাররা পুর কর্তৃপক্ষের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মদনবাবু বলেন, ‘‘অগণতান্ত্রিক ভাবে এই পুরবোর্ড চলছে। পুর কর্তৃপক্ষ পরিষেবা দিতে সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ এ ভাবে মিউটেশন কর বৃদ্ধি, পার্কিং ফি বৃদ্ধি নিয়ে যাতে তীব্র আন্দোলন হয় সে জন্য পুরসভার আমাদের পরিষদীয় দলনেতা এবং জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব।’’ বিকাশবাবু জানান, পরিষেবা না দিয়ে উল্টে ফি বাড়ানো বাসিন্দাদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করা। এর বিরুদ্ধে শীঘ্রই বৈঠক করে যুব তৃণমূল আন্দোলনে নামবে।
মেয়রের যুক্তি, পুরসভা যে হারে পার্কিং ফি ঠিক করেছিল ঠিকাদাররা তার চেয়ে বেশি ৫ টাকা, ১০ টাকা করেই নিতেন। অথচ পুরসভা সেই টাকা পাচ্ছে না। সে কারণে বর্ধিত হারে পার্কিং ফি নেওয়া হলে সেই টাকা পুরসভার ঘরেই আসবে। বিস্তারিত মেয়র পারিষদ দেখছেন। বিরোধীরা এ সব নিয়ে বলছেন কিন্তু পরামর্শের জন্য তাদের ডাকলে তারা আসেন না বলে মেয়রের অভিযোগ।
পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ দুর্গা সিংহ বলেন, ‘‘পার্কিং ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেয়র পারিষদের বৈঠকে তা পেশ করে সকলকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ একই কথা জানিয়েছেন, ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো। জানা গিয়েছে, ১৯ টি জোন থেকে বছরে ৪৫ লক্ষ টাকার মতো আয় আসত। নতুন বরাতে তা বেড়ে ৭০ লক্ষের কাছাকাছি হবে।
বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল জানিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই পুরসভা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এ সব বিষয় বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করলেই ভাল হত। তিনি বলেন, ‘‘কোনও রকম ফি বাড়ানোর আমরা বিরোধিতা করছি।’’
কংগ্রেসও শহরে পার্কিং ফি বাড়ানোর বিরোধী। শিলিগুড়ি পুরসভার কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা তথা ৩ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান সুজয় ঘটক জানিয়েছেন, পার্কিং ফি না বাড়িয়েও পুরসভা ওই খাতে আয় বাড়াতে পারে।
পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন, তারা অন্তত ৫ টি জোন নতুন করে করেছেন। আগে ১৯ টি জোন ছিল জুলাই মাস থেকে তা ২৪টি করা হয়েছে। বরাত পাওয়া ঠিকাদাররা আগে ১৪ শতাংশ সার্ভিস ট্যাক্স দিতেন। সেটা বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে। তাই পুরনো হারে পার্কিং ফি হলে অনেকে উৎসাহী ছিলেন পার্কিং বিভাগ থেকেই জানা গিয়েছে, মার্চ মাসেই পুরনো পার্কিংয়ের বরাতের মেয়াদ ফুরিয়েছে। ভোটের সময় নতুন করে বরাত দেওয়া সম্ভব নয় বলে তিন মাস মেয়াদ বাডানো হয়েছিল। জুলাই থেকে নতুন হারে পার্কিং ফি আদায় হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy