গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও মাটির উনুনে রান্না করছেন কোতোয়ালির বাসিন্দা মমতা দাস। নিজস্ব চিত্র
মাটির উনুনের পাশেই রয়েছে গ্যাস সিলিন্ডার। তবুও উনুনেই রান্না করছেন মালদহের কোতোয়ালির বাসিন্দা মমতা দাস। গ্যাস কি শেষ? মমতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় নিখরচায় গ্যাস সিলিন্ডারটি পেয়েছিলাম। আট মাস আগে ভরলেও, এখনও সিলিন্ডারে অর্ধেক গ্যাস আছে। ১,২০০ টাকা খরচ করে গ্যাস কেনার সামর্থ আমাদের নেই। তাই কাঠকুটো দিয়েই আমাদের রান্না করতে হচ্ছে।”
তাঁর মতোই গ্যাস সিলিন্ডার বাড়িতে থাকলেও রান্না করতে মাটির উনুনই ভরসা মালদহের অধিকাংশ প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার উপভোক্তাদের। শুধু গ্রাম নয়, শহরেও কার্যত একই ছবি। ২০১৬ সালের ১ মে থেকে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পে দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারকে নিখচরায় গ্যাস দেওয়ার উদ্যোগ নেয় কেন্দ্র। প্রশাসনের দাবি, মালদহ জেলায় ৪ লক্ষ ৯০ হাজার পরিবার প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। জেলায় ৭০টি গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থা রয়েছে। তাঁদের দাবি, উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের প্রায় ৬৫ শতাংশ উপভোক্তা প্রতি মাসে গ্যাস সিলিন্ডার কেনেন না। শহরের গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার এক ম্যানেজার বলেন, “উজ্জ্বলা প্রকল্পের অধিকাংশ উপভোক্তা প্রতি মাসে গ্যাস সিলিন্ডার নেন না। কেউ তিন মাস, কেউ আবার চার মাস পর পর সিলিন্ডার নিচ্ছেন। প্রথম দিকে, বিনামূল্যে পরিষেবা পেলেও এখন তাঁদেরও নায্য মূল্যেই গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে।”
এখন গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ১,২০০ টাকা। হবিবপুরের বাসিন্দা শম্পা চৌধুরী বলেন, “গ্যাসের জন্য শহরে যেতে হয়। ফলে, ভাড়া বাবদ আরও একশো টাকা খরচ হয়ে যায়। এ ছাড়া, একটি গ্যাস সিলিন্ডার নিতে গিয়ে গোটা দিন চলে যায়। সে সময় জমিতে কাজ করলে, ঘরে আরও দু’শো টাকা আসবে। তাই গ্যাসের বদলে কাঠকুটো দিয়েই রান্না করছি।” কাঠকুটো দিয়ে রান্নার ফলে দূষণ ছড়াচ্ছে, দাবি পরিবেশবিদদের। উজ্জ্বল যোজনার উপভোক্তা দীপক দাস বলেন, “দূষণ কমাতে এবং মহিলাদের সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী গ্যাস দিয়েছিলেন। সে গ্যাসের ব্যবহার আমাদের কাছে এখন বিলাসিতা হয়ে উঠেছে।”
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মালদহের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। তিনি বলেন, “ঢাকঢোল পিটিয়ে উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাস বিলি করা হয়েছিল। সে গ্যাস নিয়েই এখন গ্রামবাংলার মানুষের নাজেহাল অবস্থা। কেন্দ্র জ্বালানির দাম বাড়িয়েই চলেছে।” উত্তর মালদহের বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারের উপরে জ্বালানির দাম ওঠা-নামা করে। বিরোধীরা সব জেনেও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy