Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Winter in North Bengal

শীতলতম দার্জিলিং, কুয়াশা, কনকনে ঠান্ডা সব জেলাতেই 

দার্জিলিঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এ দিন ছিল ১.৬ ডিগ্রি। মেঘাচ্ছন্ন ছিল। তুষারপাত হয়নি দার্জিলিং বা তার আশপাশে। যদিও শিলাবৃষ্টি এবং তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া দফতর।

বরফের চাদরে মোড়া সিকিমের জ়িরো পয়েন্ট। বুধবার

বরফের চাদরে মোড়া সিকিমের জ়িরো পয়েন্ট। বুধবার —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০৫
Share: Save:

গত কয়েক বছরের তুলনায় হঠাৎ করে কেন বেড়ে গেল উত্তরবঙ্গে এ বছর এত ঠান্ডা? তার কারণ খুঁজতে গিয়ে তিব্বত থেকে শুরু করে চিন পর্যন্ত তৈরি হওয়া বেশ কয়েকটি ঘূর্ণাবর্তকেই এই চিহ্নিত করছেন আবহাওয়া আধিকারিকেরা। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে নাথু লা এবং সান্দাকফুতে তুষারপাত। বুধবার সকালে তাপমাত্রা আরও নেমে গিয়ে শীতলতম দিন পেয়েছে দার্জিলিং। যদিও অন্য জেলায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু কনকনে ঠান্ডা, কুয়াশার প্রভাব থেকে এ দিনও মুক্ত হতে পারেনি উত্তরবঙ্গের
বেশির ভাগ জেলা।

শুধু ঠান্ডা বেড়ে যাওয়াই নয়, এ বার শীতে দার্জিলিঙের সঙ্গে জলপাইগুড়ির তাপমাত্রার ফারাকও উল্লেখযোগ্য ভাবে কম থাকতে দেখা গিয়েছে। উচ্চতার নিরিখে আক্ষরিক অর্থেই দুই শহরের পার্থক্য প্রায় আকাশ-পাতাল। একটি শহরের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০৪৮ মিটার উচ্চতায়, অন্য শহরের উচ্চতা মাত্র ৮৯ মিটার। তবুও মাঘ মাসের প্রথম দিন দুই শহরের তাপমাত্রা একই রেখায় চলে এল। গত মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং জলপাইগুড়ি শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। দুই শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য নেমে আসে মাত্র ৪ ডিগ্রিতে। শুধু তা-ই নয়, গত ছয় বছরের নিরিখে গত মঙ্গলবারই ছিল জলপাইগুড়িতে শীতলতম দিন। ২০১৮ সালের ৬ জানুয়ারি জলপাইগুড়ির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমেছিল ১৩ ডিগ্রিতে।

দু’হাজার মিটার উঁচুতে থাকা শহরে সঙ্গে জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা একই রেখায় চলে এল কী করে, তা নিয়ে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, এর নেপথ্যে রয়েছে কুয়াশা-রেখা। উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে একটি কুয়াশা-রেখা উত্তর-পূর্ব ভারতে বিস্তৃত। এই রেখাটি রয়েছে পাহাড়ের নীচে, অর্থাৎ, দার্জিলিংয়ের নীচে এবং এই রেখা গিয়েছে জলপাইগুড়ি শহরের উপর দিয়ে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “কুয়াশার স্তর থাকায় দিনের আলো সে ভাবে পায়নি জলপাইগুড়ি। সে কারণেই জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা একধাপে অনেকটাই কমে গিয়েছিল।“ পাশাপাশি, তিনি সমগ্র উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পশ্চিমী ঝঞ্ঝার দাপট যে বার বেশি হয়, উত্তরবঙ্গে ঠান্ডাও তত বেশি পড়ে।’’ আধিকারিকদের দাবি, কেন ঝঞ্ঝার প্রভাব বাড়ে, তা বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে।

দার্জিলিঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এ দিন ছিল ১.৬ ডিগ্রি। মেঘাচ্ছন্ন ছিল। তুষারপাত হয়নি দার্জিলিং বা তার আশপাশে। যদিও শিলাবৃষ্টি এবং তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া দফতর। কালিম্পংও ছিল মেঘাচ্ছন্ন। উত্তরবঙ্গের বাকি সব সব জেলাতেই তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির উপরে ছিল। কয়েকটি জেলায় ১২ ডিগ্রিও ছুঁয়েছে এ দিন। কিন্তু ঠান্ডার হাত থেকে রেহাই মেলেনি।

এ দিন শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির কিছু এলাকায় রোদ ওঠে বেলা ২টোর পরে। সকাল থেকে কুয়াশা ছিল। বাতাস ছিল। যদিও পরে বাতাস কমলেও, ঠান্ডার অনুভূতি কমেনি। কোচবিহারে ঘন কুয়াশা দুপুরবেলাতেও ছিল। আলিপুরদুয়ারে বাতাস তেমন না থাকলেও কুয়াশা ছিল রোদ ওঠে বেলাতে। কিন্তু রোদের দেখা মেলেনি, উত্তর দিনাজপুরে। কুয়াশা বেশি থাকলেও ঠান্ডা বাতাস কম ছিল। মালদহ এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে দু'দিন পর বুধবার রোদের সামান্য ঝলক দেখা যায়। তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ে। তবে সকাল থেকে কুয়াশা এবং ঠান্ডা ছিল সব জায়গাতেই। উত্তরবঙ্গ থেকে এবং উত্তরবঙ্গগামী দূরপাল্লার ট্রেনগুলি কুয়াশার জন্য নিয়মিত ভাবে দেরিতে চলছে। মিতালী এক্সপ্রেসও দেরিতে চলেছে বলে রেল সূত্রে খবর।

অন্য বিষয়গুলি:

Winter cold IMD
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy