বালুরঘাটের অভিযাত্রী প্রাথমিক স্কুলে একটি ঘরে পড়ে রয়েছে পড়ুয়াদের গত বছরের পোশাক, জুতো। অনেক অভিভাবক গুণমান খারাপ থাকার জন্য সেগুলি নেননি বলে স্কুল সূত্রে খবর। প্রাথমিক থেকে শুরু করে হাই স্কুল, মাদ্রাসা সমস্ত ক্ষেত্রেই পোশাকের মাপ ঠিক না হওয়ার সমস্যায় এ বারও ভুগছে দক্ষিণ দিনাজপুরের একাধিক পড়ুয়া। গ্রামাঞ্চলে পরিবারগুলির আর্থিক সমস্যার জন্য সেই সব পোশাক পড়ুয়ারা নিয়ে নিতে বাধ্য হলেও শহরাঞ্চলে একাধিক স্কুলে এই পোশাক নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। সরকারি অর্থ অপচয়ের পাশাপাশি পোশাক রাখার আলাদা ঘরও রাখতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, মাপে গোলমাল হলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমেই তা ঠিক করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পোশাকগুলি যে স্কুলে স্কুলে পড়ে থাকছে, তা স্কুলকে জানাতে হবে। তা করা হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘কিছু স্কুলে গোলমাল আছে ঠিকই, কিন্তু তা একেবারেই সামান্য। অনেক স্কুল জানায়নি যে তাদের পোশাক পড়ে রয়েছে।’’ কী ভাবে পোশাক ঠিক করা হয়? জেলা স্কুল পরিদর্শক দফতরগুলি সূত্রের খবর, কোনও একটি ক্লাসের বাচ্চার পোশাকের মাপ একই রকম ধরে অর্ডার কলকাতায় পাঠানো হয়। তাতে কিছুটা ছোট–বড় হয়। এক একটি পড়ুয়ার মাপ আলাদা নিতে বেশ কয়েক মাস বেরিয়ে যেতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি। তপনের সালাসের অভিভাবক প্রমিত বসাক বলেন, ‘‘স্কুল থেকে দেওয়া পোশাক আরামদায়ক নয়। মাপেও গোলমাল। তবে না নিলে আর পাওয়া যাবে কি না ভেবে স্কুল পোশাক নিয়ে নিয়েছি।’’ তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজনারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘এ রকম কোনও অভিযোগ নেই যে, কোনও পড়ুয়া স্কুল-পোশাক ব্যবহার করতে পারছে না।’’ বামেদের প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ জেলা সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘পোশাকের মান খারাপ, মাপে গোলমাল বলে বহু অভিভাবক তা তুলছেন না। কিন্তু খারাপ বলে অভিযোগের রাস্তাতেও তারা হাঁটছেন না। আমরা সেগুলি ফেরত দেওয়ারও বিকল্প পাচ্ছি না।’’ পাশাপাশি, এ বছর কেবল এক সেট হাফ হাতা পোশাক এসেছে। এখনও আসেনি জুতো।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)