Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
India Bangladesh Border

জামাইষষ্ঠী এ পারেই, তবু কাঁটাতার পেরোলেন সঞ্জিত 

কাঁটাতারটা পেরোতে হয় বটে। রওনা হওয়ার আগে কথায় কথায় জানালেন, তাঁর বাড়ি কাঁটাতারের এ পারে, কোচবিহারের মাথাভাঙা মহকুমার শিকারপুরের শাখাতি গ্রামে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪ ০৯:৫০
Share: Save:

স্কুলের কাজ দ্রুত শেষ করে দুপুর নাগাদ রওনা দিলেন সঞ্জিত বর্মণ। বাইকে চার-পাঁচ কিলোমিটারের পথ পেরিয়ে এসে দাঁড়ালেন সীমান্তে, কাঁটাতারের সামনে। কাঁটাতারের গেটের দরজা খোলা। দু'পাশে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে বিএসএফ জওয়ানেরা। সামনের টেবিলে নাম নথিভুক্ত হচ্ছে। সেখানেই জমা দিতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র। সঙ্গে মোবাইল ফোনের নম্বর, কোন সংস্থার ফোন, সে সব জানার মিলছে অনুমতি। এর পর ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে বিএসএফের এক জওয়ানকে সঞ্জিত বললেন, ‘‘আজ তো জামাইষষ্ঠী হ্যায়। ইস লিয়ে শ্বশুরবাড়ি যানা হ্যায়।’’ শুনে মুচকি হেসে শুভেচ্ছাও জানালেন এক জওয়ান। কাঁটাতার পেরিয়ে আধ কিলোমিটার পথ পেরোলেই শ্বশুরবাড়ির গ্রাম। বাইকে স্টার্ট দিয়ে রওনা দিলেন সে পথে।

বাংলাদেশে নয়। এ দেশেই সঞ্জিতের শ্বশুরবাড়ি। তবে কাঁটাতারটা পেরোতে হয় বটে। রওনা হওয়ার আগে কথায় কথায় জানালেন, তাঁর বাড়ি কাঁটাতারের এ পারে, কোচবিহারের মাথাভাঙা মহকুমার শিকারপুরের শাখাতি গ্রামে। সেখান থেকে কয়েক কিলোমিটারের পথ সাতগ্রাম। দুই গ্রামই ভারতের অংশ। কিন্তু কাঁটাতার দু’পাশকে ভাগ করে দিয়েছে। শিকারপুরের একটি জুনিয়র হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সঞ্জিতের কথায়, ‘‘বিএসএফের পাহারা আমরা জন্মের পর থেকে দেখেছি। এত নিয়ম-কানুনের জন্য কিছুটা তো অসুবিধে হয়ই।’’ জানালেন, ফেরার পথে বিএসএফের কাছ থেকে নিতে হবে পরিচয়পত্র। সঙ্গে তল্লাশিও হবে। যাওয়ার পথে যা যা নিয়ে ঢুকেছিলেন তিনি, ফেরার সময়েও সঙ্গে তাই আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার পরে ছাড়পত্র মেলে। বছর চারেক আগে সাতগ্রামের নগেন বর্মণের মেয়ে অনিতার সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তাঁদের ছোট একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। অনিতা ফোনে বললেন, ‘‘আমরা তো ছোটবেলা থেকে এমন সমস্যা দেখে বড় হয়েছি। এখন আর অসুবিধে হয় না।’’ সাতগ্রামের বাসিন্দারা জানান, গ্রামে কোনও অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র, প্রাথমিক স্কুল নেই। নেই কোনও চিকিৎসার সুব্যবস্থা। সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত কাঁটাতরের গেট খোলা থাকে। রাতে বন্ধ থাকে। রাতে কেউ অসুস্থ হলে বা কোনও মহিলার প্রসব বেদনা উঠলে বিএসএফের অনুমতি নিয়ে মূল ভখণ্ডে যেতে হয়।

ওই এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য পূর্ণ ডাকুয়া বলেন, ‘‘দেশের সমস্ত জায়গায় সীমান্তের নিয়ম এক। অসুবিধে তো আছেই অনেক। বিএসএফের সহযোগিতা মূল ভরসা। তবে গ্রামে একটি স্কুল হলে ভাল হয়।’’ বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। তবে নাগরিকদের যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সেটা লক্ষ রাখা হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy