—প্রতীকী চিত্র।
করোনার নতুন উপপ্রজাতি নিয়ে কেন্দ্রের তরফে সতর্কবার্তা আসছে। অথচ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের আরটিপিসিআর পরীক্ষাগারে (ল্যাবরেটরি) পর্যাপ্ত কর্মী নেই। অথচ, বায়োলজিস্ট, ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান-সহ সব মিলিয়ে আরও তিন জন কর্মী রাখতে সরকারি বরাদ্দ আসছে প্রতি মাসেই। এবং সেই টাকা ফেরত যাচ্ছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি জেনে অসন্তুষ্ট স্বাস্থ্য দফতরও। সম্প্রতি তা নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকেও তারা বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। এই ল্যাবরেটরিতেই করোনা-সহ ভাইরাস ঘটিত বেশ কিছু রোগের সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য নমুনা আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হয়।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ওই সমস্ত নমুনা পরীক্ষার জন্য ‘ভাইরাল রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গনস্টিক ল্যাবরেটরি’ এবং আরটিপিসিআর ল্যাবরেটরি রয়েছে। করোনা সংক্রমণের মতো ভাইরাসঘটিত সংক্রমণ দেখা দিলে, ওই পরিস্থিতিতে আরটিপিসিআর ল্যাবরেটরির কাজের চাপও বেড়ে যায়। কিন্তু গত তিন বছর ধরে, কার্যত করোনা কালের সময় থেকেই কর্মীর অভাবে কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। অথচ, আরটিপিসিআর ল্যাবরেটরির সমস্ত কর্মীদের জন্য প্রতি মাসেই অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বছরে তা থেকে প্রায় আট লক্ষ টাকা ফেরত যাচ্ছে। এ বিষয়ে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান তথা ল্যাবরেটরির দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অরুণাভ সরকার কিছু বলতে চাননি। অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহাকে ফোন করা হলেও উত্তর মেলেনি। মেসেজ করলেও জবাব মেলেনি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নেব।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আরটিপিসিআর ল্যাবরেটরিতে দু’জন মলিকিউলার বায়োলজিস্ট থাকার কথা। অথচ, প্রায় তিন বছর ধরে এক জনকে দিয়েই কাজ চলছে। তাঁদের প্রত্যেকের বেতন ৪০ হাজার টাকা। ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান দু’জন থাকার কথা। অথচ, দু’বছর ধরে এক জন রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের বেতন ১৮ হাজার টাকা করে। এবং এক জন ‘ডাটা এন্ট্রি অপারেটর’ থাকার কথা। তাঁর বেতন ১৩ হাজার টাকা। খালি থাকলেও ওই তিন পদে নিয়োগ করা হচ্ছে না। অথচ, প্রতি মাসেই তাদের জন্য বরাদ্দ টাকা পাঠায় রাজ্য। লোক না থাকায় সে টাকা ফেরতও চলে যাচ্ছে।
‘ভিআরডিএল’, আরটিপিসিআর, টিবি পরীক্ষার মতো একাধিক ল্যাবরেটরি চলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। কর্মী পর্যাপ্ত না থাকায়, কোনও ল্যাবরেটরিতে কাজের চাপ কম থাকলে সে পরীক্ষাগারের কর্মীকে অন্য ল্যাবরেটরিতে কাজ করিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। অথচ, এই পরিস্থিতির মধ্যে সরকারি অর্থ দিলেও কেন ওই সমস্ত পদে লোক নেওয়া হচ্ছে না সে বিষয়ে সদুত্তর মেলেনি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এমন হলে, সমস্যা নিশ্চয়ই বাড়বে। তাই কী ভাবে সমাধান করা যায় তা দেখা হবে।’’
ফের করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট চোখ রাঙাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষা বাড়াতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে জেলাগুলোতে। তার মধ্যে প্রায় এক বছর হতে চলল জলপাইগুড়ির আরটিপিসিআর ল্যাবরেটরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সপ্তাহে ১০০টির মতো নমুনা পাঠানো হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের আরটিপিসিআর ল্যাবরেটরিতেই। এখন এই চাপ বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy