Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরেই সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতা গ্রেফতার

ধৃতকে এ দিন চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ধৃত: সুকেশ যাদব। —নিজস্ব চিত্র

ধৃত: সুকেশ যাদব। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মালদহ শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০৪:৪০
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা দিয়ে মন্ত্রীর সতর্কীকরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার শাসক দলের প্রাক্তন এক জনপ্রতিনিধি। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ গ্রেফতার করে রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দাটোলা তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সুকেশ যাদবকে। তাঁর বিরুদ্ধে দু’বছর আগে নির্মল মিশন প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ছিল।

সোমবারই এখানে দলের জেলা পর্যবেক্ষক ও ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে জানান, দলীয় পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে কারও বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ বরদাস্ত করা হবে না। মঙ্গলবারও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকেও একই বার্তা দেন তিনি। তার পরেই নড়েচড়ে বসে জেলা পুলিশ। বুধবার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ধৃত প্রাক্তন প্রধান সুকেশ যাদবের বাড়ি রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামগোপটোলা গ্রামে। মঙ্গলবার গভীর রাতে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে রতুয়া থানার পুলিশ।” ধৃতকে এ দিন চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সুকেশের বিরুদ্ধে দু’বছর আগে মামলা হওয়া সত্ত্বেও এতদিন পর তাঁকে গ্রেফতার করা হল কেন। তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকাতেই কি তাকে এতদিন গ্রেফতার করা হয়নি? এখন মুখ্যমন্ত্রী-মন্ত্রীর বার্তা পেয়েই কি পুলিশ সক্রিয় হয়ে পড়ল? পুলিশকর্তারা অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সুকেশ মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। প্রথমে তিনি কংগ্রেস থেকে জিতেছিলেন। পঞ্চায়েতে কংগ্রেসেরই বোর্ড হয়েছিল। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তিনি সদলবলে তৃণমূলে যোগ দেন। গ্রাম পঞ্চায়েতটিও তৃণমূলের দখলে আসে। যদিও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগেই তাঁর বিরুদ্ধে শৌচাগার তৈরির নামে সরকারি অর্থ তছরুপের অভিযোগ ওঠে ও মামলা রুজু হয়। সেই মামলা রুজুর পরেও ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল তাঁকে শ্যামগোপটোলা বুথে গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রার্থী করেছিল। যদিও তিনি হেরে যান।

প্রশাসনিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের প্রায় এক কোটি টাকা অর্থে নির্মল মিশন প্রকল্পে মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ২৬০০টি শৌচাগার তৈরির কথা ছিল। অভিযোগ, তার মধ্যে প্রায় দু’হাজার শৌচাগার তৈরি না করেই সেই টাকা গায়েব করে দেওয়া হয়। ২০১৭ সালেরই ৬ নভেম্বর সরকারি টাকা তছরুপের অভিযোগে রতুয়া-১ ব্লকের তৎকালীন বিডিও অর্জুন পাল রতুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এতদিন তাঁকে গ্রেফতার করেনি। এর পরেও সুকেশকে তৃণমূলের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও দেখা যেত।

এদিন আদালতে যাওয়ার পথে সুকেশ সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, তিনি রাজনীতির শিকার হলেন। তাঁর গ্রেফতারির প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, “সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকের পর দলীয় জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানিয়ে দেন যে কোনও দুর্নীতির সঙ্গে আপস করা হবে না, তা তিনি যে দলই করুন না কেন। ওই প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, পুলিশ গ্রেফতার করেছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Ratua TMC Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy