Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য

সূত্রের খবর, ঝড়ে বিধ্বস্ত ভুবনেশ্বরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজের জন্য রেজাউল সহ কয়েক জনকে সেখানে নিয়ে যান এলাকারই শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদার শেখ মোকাদ্দার।

শোকাহত মৃতের স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র

শোকাহত মৃতের স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
রতুয়া শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০৪:৫২
Share: Save:

ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু হল মালদহের রতুয়ার এক শ্রমিকের। বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই শ্রমিকের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। শনিবার দুপুরে ওড়িশার ভুবনেশ্বরে মারা যান ওই শ্রমিক। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, মৃতের নাম শেখ রেজাউল (২৭)। বাড়ি রতুয়ার বাহারালের কসবা এলাকায়।

সূত্রের খবর, ঝড়ে বিধ্বস্ত ভুবনেশ্বরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজের জন্য রেজাউল সহ কয়েক জনকে সেখানে নিয়ে যান এলাকারই শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদার শেখ মোকাদ্দার। ঝুঁকির কাজ হওয়ায় তারা বিমার আওতায় থাকবেন বলেও জানানো হয়। তিন মাসের কাজ শেষে রবিবার রেজাউলদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল।

মৃতের পরিজনদের অভিযোগ, শনিবার বাড়িতে স্ত্রী সালেমা বিবি, মা জহরা বেওয়ার সঙ্গে কথাও বলেছিলেন রেজাউল। তখনই তিনি জানান, কাজ শেষ, রবিবার বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু শনিবার তাঁকে কাজের কথা বলে বিদ্যুতের খুঁটিতে ওঠানো হয়। রেজাউল ওঠার পরেই যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে তিনি মারা যান। প্রশ্ন উঠছে, যখন কেউ কাজ করছেন, তখন তো তারে বিদ্যুৎ থাকারই কথা নয়। তাই ঘটনাটি নিছকই দুর্ঘটনা না, এর পিছনে কোনও অভিসন্ধি রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার পর রেজাউলের সঙ্গীদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

মৃতের পিসি চাঁদ সুলতানা বিবি বলেন, ‘‘ভাইপোর সঙ্গীরাই জানিয়েছেন যে, রেজাউলের বাড়িতে কে কে রয়েছে তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছিল। তারপর তাঁকে বাড়িতে মা ও স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলেন কর্তা স্থানীয় কয়েকজন। কিছু ক্ষণ বাদেই রেজাউলের মৃত্যুর খবর পাই।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা, কিছু ঘটনা লোকানো হচ্ছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পায়েল খাতুন বলেন, ‘‘যা শুনেছি, তাতে রহস্য রয়েছে। আমরা চাই ঘটনার উচ্চ পর্য়ায়ের তদন্ত হোক।’’

রেজাউলের বিমার টাকা হাতানোর চেষ্টাও হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রেজাউলের কয়েকজন সঙ্গী সংস্থার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চাইলেও তাদের সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার শেখ মোকাদ্দার বলেন, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবে এক জনকে মেরে ফেলবে, এমনটা কেউ করে নাকি। সংস্থার তরফে যা বিমা রয়েছে তা তাঁরা পাবেন।’’

কিন্তু জেলা থেকে অদক্ষ শ্রমিকদের বিভিন্ন কাজে নানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সে সব কাজে ঝুঁকি রয়েছে। যেমন রেজাউল বিদ্যুতের কাজ তেমন জানতেন না বলেই স্থানীয় সূত্রে দাবি। তবু তাঁকে সেই কাজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেক্ষেত্রে সরকােরর ভূমিকা কী? চাঁচল মহকুমা শ্রম দফতরের সহকারী কমিশনার সঞ্জয় তিওয়ারি বলেন, ‘‘কারা যাচ্ছেন, তাঁরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কি না তার কোনও খতিয়ান আমাদের কাছে নেই। শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদাররা কাদের নিয়ে যাচ্ছেন, সেই তথ্য শ্রম দফতরকে জানানোর কথা, কিন্তু কখনওই তা জানানো হয় না। কারা কোথায় কাজ করতে যাচ্ছেন কোনও রাজ্যই সেই হিসেব অন্য রাজ্যকে দেয় না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ratua Malda Labour Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy