কংগ্রেস প্রার্থী সুখবিলাস বর্মার সঙ্গে বামফ্রন্টের নেত্রী দূর্বা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
কংগ্রেস প্রার্থীর বারবার নজর চলে যাচ্ছিল হাতঘড়ির দিকে। দৃশ্যতই উৎকন্ঠার ছাপ তাঁর মুখে। একবার এক সিপিএম কর্মীকে বলেন, ‘‘পার্টি অফিসে ফোন করে দেখুন, ওঁরা রওনা দিল কি!’’
বেশি ক্ষণ অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়নি জলপাইগুড়ির কংগ্রেস প্রার্থী সুখবিলাস বর্মাকে। মিনিট দশেক পরেই জলপাইগুড়ির দিশারী মোড়ে চলে আসেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জিতেন দাস। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদারের উদ্বেগ বেরিয়ে আসে, ‘‘সলিল তো এল না, এখনও।’’ মিছিল এগোতে থাকে। এক কর্মীর বাইকে চেপে এসে কিছুটা দূরে মিছিলে যোগ দেন সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য।
শুক্রবার বিকেলে শহরে এগোতে থাকে বিরোধী জোটের মিছিল। শিল্পসমিতি পাড়া, উকিলপাড়া, কদমতলা মোড়, ডিবিসি রোড, মার্চেন্ট রোড ঘুরে মিছিল শেষ হয় বেগুনটারি মোড়ে। তত ক্ষণে সন্ধে হয়ে গিয়েছে। মিছিলের শেষ হওয়ার পরেও বেগুনটারি মোড়ে দীর্ঘ ক্ষণ কংগ্রেস এবং সিপিএম কর্মী সমর্থকদের গল্প-আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে।
এ দিন-ই ছিল জলপাইগুড়িতে বিরোধী জোটের প্রথম মিছিল। এর আগে কংগ্রেস এবং বাম নেতাদের এক সঙ্গে বৈঠক অথবা দেওয়াল লিখনে দেখা গেলেও প্রকাশ্যে মিছিলে দেখা যায়নি। দু’দলের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যেই যৌথ প্রচারের দাবি উঠেছিল। এক সঙ্গে মিছিলে না হাঁটলে দুই দলের ভোটারদের কাছে জোটের যথাযথ বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাবে না বলে দাবি করেন নিচুতলার কর্মীরা। গত বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা শিলিগুড়ির প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য, সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার এবং জেলা কংগ্রেস সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকার এক সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন। অশোকবাবুর মনোনয়নেও শঙ্করবাবু থাকবেন বলে জানিয়ে দেন। এরপরে পাশের শহর জলপাইগুড়িতেও দু’দলের নেতাদেরও যাবতীয় সব জড়তা কাটিয়ে এক সঙ্গে প্রকাশ্যে প্রচারে নামার দাবি ওঠে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। সেই দাবি মেনে এ দিন প্রথম জোটের মিছিলে সিপিএম-কংগ্রেস নেতাদের এক সঙ্গে পা মেলাতে দেখল জলপাইগুড়ি। দুই দলেরই দাবি, স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল হয়েছে।
এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দিশারী ক্লাব এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়। সিপিএমের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যরা ছাড়াও জলপাইগুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক সুভাষ দে, লোকাল কমিটির সম্পাদক শক্তি গোস্বামী, জেলা কমিটির সদস্য গিরীন দত্ত, বিপুল সান্যাল এবং কাউন্সিলার দূর্বা বন্দ্যোপাধ্যায়রা মিছিলে ছিলেন। কংগ্রেসের সদর ব্লক সভাপতি লুৎফর রহমান, জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি সুভাষ বক্সীরাও মিছিলে ছিলেন।
দিশারী মোড় থেকে মিছিলের শুরু বলা হলেও, সিপিএম এবং কংগ্রেস কার্যালয়ে বিকেল থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সলিলবাবু ছাড়াও সম্পাদকমণ্ডলীর আর এক সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ মিনতি সেন কদমতলার পার্টি অফিসে চলে আসেন। কংগ্রেস কর্মীরা দিশারী ক্লাবের সামনে দুপুরের পর থেকেই জড়ো হয়েছিলেন।
মিছিলের অনেক আগেই কংগ্রেস প্রার্থী সুখবিলাসবাবু চলে আসেন। সিপিএম কাউন্সিলর দূর্বাদেবী সহ অন্য নেতাদের সঙ্গে করমর্দন করেন। ভবিষ্যতের প্রচার নিয়েও আলোচনা করেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মলবাবুর কথায়, ‘‘জোট যখন হয়েছে, তখন যৌথ প্রচারও হবে। আমরা তৃণমূলকে হারাতে জোট বেঁধেছি, এর মধ্যে লুকোনোর কিছু নেই। আরও বেশি করে যৌথ মিছিল এবং সভা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy