রাজু বিস্তা। ফাইল চিত্র
সব যেন আগে থেকেই তৈরি ছিল। কেউ এনে রেখেছিলেন গাঁদা ফুলের মালা, কেউ মিষ্টি। বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে তা দিয়েই আপ্যায়ন করলেন সকলে মিলে। বুধবার দুপুরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রচারে বেরিয়ে কোচবিহারে ভবানীগঞ্জ বাজারে যান বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। সেখানে বেশ কিছুটা পথ হাঁটেন তিনি। হাঁটাপথে নির্দিষ্ট কিছু দোকানে বিজেপি কর্মীরা তাঁকে নিয়ে যান। অবশ্য রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে দুই-একজন সাধারণ মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন রাজু। তবে মঙ্গলবারের মতো এ দিন কোনও অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি রাজুকে। এ দিন প্রথম থেকেই তাঁকে আগলে রেখেছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা। রাজু নিজেও এ দিন বাড়তি কিছুটা সতর্ক ছিলেন।
তবে এ দিন রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “ভয় পাবেন না। কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।” তাহলে মানুষকে ভয়ে আছেন? রাজুর উত্তর, “আসলে ভয় দেখানোর একটা চেষ্টা চলছে। যা করছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। তাই কেউ যাতে ভয় না পান, সেটা বোঝানোর দায়িত্ব আমাদের।”
তৃণমূলের অবশ্য কটাক্ষ, বিক্ষোভ বা প্রশ্নের মুখে পড়ার ভয়ে আগে থেকেই চিত্রনাট্য তৈরি করে রাখা হয়। সেই মতোই বিজেপি নেতা প্রচার করেন।
রাজ্যের শাসক দলের কোচবিহার জেলার সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “সাধারণ মানুষকে একটা বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ভোটার, আধার কার্ড, রেশন কার্ড থাকার পরেও তাঁরা ভারতীয় নাগরিক নন বলে দাবি করা হচ্ছে। এটা মানুষ কোনও ভাবেই মেনে নেবে না। তাই এখন ওই আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে বিজেপি।”
ওই প্রচারে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতী রাভা, দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে। মালতী বলেন, “আসলে সমস্ত মানুষই এখন বিজেপিকে চাইছে। একটি দোকানে গেলেই চারপাশের মানুষ ভিড় করেছেন। এ দিন তা-ই হয়েছে। এসব জানতে পেরে তৃণমূলের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে তৃণমূল টানা প্রচারের কর্মসূচি নিয়েছে। পিছিয়ে নেই বাম-কংগ্রেসও। এই অবস্থায় পাল্টা আইনের পক্ষে জনমত গঠনে আসরে নেমেছে বিজেপিও। এ দিন সকালে জেলা পার্টি অফিসের কর্মসূচি সেরে ১২টা নাগাদ ভবানীগঞ্জ বাজারের মীনাকুমারি চৌপথীতে পৌঁছন রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। এনএন রোড ধরে পাওয়ার হাউস মোড় হয়ে আনাজ বাজারের ভিতরে ঢোকেন।
ওই এলাকার একটি বড় অংশ অবাঙালি সম্প্রদায়ের। তাঁদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব বরাবরই রয়েছে। ওই এলাকার বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বেছে বেছে এনএন রোডের কয়েকটি দোকানেই তাঁকে নিয়ে যান। সেখানেই একটি দোকানে তাঁকে গাঁদা ফুলের মালা পরানো হয়। আরেকটি দোকানে তাঁকে মিষ্টিমুখ করানো হয়। দোকানিরা যে বিজেপি সমর্থক সে কথা জানিয়েও দেন রাজুকে। তারই মধ্যে অবশ্য একটি ফলের দোকানের মালিক, একজন টোটো চালকের হাতেও লিফলেট তুলে দেন
বিজেপির সাধারণ সম্পাদক। একটি দোকান থেকে পিঠে কিনে খান সবাই মিলে। একটি দোকানে বসে চা খান তাঁরা।
বাজারের মধ্যেই কিছু ফুল নিয়ে বসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নৃপেন সেন। তাঁকে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভয় পাবেন না। এখানেই আছেন, এখানেই থাকবেন।” নৃপেন বলেন, “আমরা তো এহেনকারই মানুষ। ছোট থিকা এহেনেই আছি। ভয় পামু কেন?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy