রাজু বিস্তা। ছবি: সংগৃহীত
অসমের এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরই বিনয় তামাং দাবি করেছিলেন, প্রায় দেড় লক্ষাধিক গোর্খার নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বাদের তালিকায় আছে লক্ষাধিক গোর্খার নাম। সেই সব দাবিকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। এ দিন অবশ্য তাঁকেই দেখা গেল, একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে ‘সত্যিটা’ মেনে নিতে।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন সাংসদ। সেখানে তিনি গোর্খাদের নাম বাদ পড়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে একটি ছোট সংশোধনীও রেখেছেন। তাঁর হিসেব অনুযায়ী, লক্ষাধিক নয়, তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে ৭৫-৮০ হাজার গোর্খার নাম। তবে পদ্ধতিগত কারণেই নাম বাদ পড়েছে বলে দাবি করেন রাজু। তাঁর কথায়, যাঁরা ‘প্রকৃত ভারতীয়’, তাঁদের একজনেরও নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে না। যদিও ‘প্রকৃত ভারতীয়’ বলতে তিনি ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি।
স্বাভাবিক ভাবেই সাংসদকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিনয়। তিনি বলেন, ‘‘উনি দিল্লির বাসিন্দা। পাহাড় বা গোর্খাদের নিয়ে উনি উদাসীন। গোর্খাদের সমস্যা নিয়ে ওঁর মাথাব্যথা নেই। তাই প্রথমে গুজব বলে এখন বেকায়দায় পরে ৮০ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছেন। তালিকা থেকে বাদ পড়া গোর্খাদের জন্য কী করবেন উনি বা ওঁর দল, তা স্পষ্টভাবে জানান।’’ পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও বলেন, ‘‘সাংসদ পর্যটকের মতো ঘুরতে আসেন, আর ছবি তুলে চলে যান।’’ বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে ফিরে শিলিগুড়ি শহরে দলের শিক্ষক দিবস পালন অনুষ্ঠানে যোগ দেন সাংসদ। সেই অনুষ্ঠানে জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ও উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে খড়িবাড়ির বুড়াগঞ্জে দলীয় সভায় যোগ দেন রাজু। বাতাসিতে বিজেপি আয়োজিত একটি নাগরিক সভাতেও বক্তব্য রাখেন।
রাজু বলেন, ‘‘গোর্খারা এনআরসি-র বিরুদ্ধে নয়। বিনয় তামাং ও তৃণমূল মানুষকে ভুল বার্তা দিচ্ছেন। পাহাড়ের জনগণ ওঁদের হারিয়ে প্রমাণ করেছেন, ওঁদের কোনও গুরুত্ব নেই। দেশের স্বার্থে এনআরসি প্রয়োজন। বাংলাতেও এনআরসি জরুরি।’’ বাংলায় এনআরসি চালুর চেষ্টা হলে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করা হবে বলে এ দিন জানান গৌতম।
বুধবারই এনআরসি নিয়ে পাহাড়ে টানা আন্দোলনের কথা ঘোষণা করেছে বিনয়পন্থী মোর্চা। বুথস্তর থেকে আন্দোলন তৈরির কর্মসূচিও তৈরি করে ফেলেছে অনীত থাপারা। পাহাড়ের বিজেপি নেতাদের একাংশ জানিয়েছে, এনআরসি নিয়ে যে ভাবে পাহাড় জুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, বিনয়ের দল তার ফায়দা তুলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা পাল্টা প্রচারে না নামলে মোর্চা একতরফা গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যাতে পারে। তাই তড়িঘড়ি কয়েক দিনের সফরে দার্জিলিঙে এসেছেন সাংসদ। তিন-চার দিন ধরে তিনি পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে এনআরসি নিয়ে প্রচার চালাবেন, জানান বিজেপির পাহাড় কমিটির সভাপতি মনোজ দেওয়ান। বিজেপি দলের নেতাদের এই নির্দেশই দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy