Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Smriti Irani at Siliguri

স্মৃতির চা বাগানের সভায় শ্রমিক কোথায়, প্রশ্ন দলেই 

গ্রাম পঞ্চায়েতের পরে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনেও আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি। আদিবাসী ভোটের একটা বড় অংশ বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশই মানছেন।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি কে টুকরি ভরে চা পাতা তুলে দিয়েছেন এক চা শ্রমিক সেটাই মাথায়

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি কে টুকরি ভরে চা পাতা তুলে দিয়েছেন এক চা শ্রমিক সেটাই মাথায় লাগিয়ে সভা মঞ্চে শিলিগুড়ি দাগাপুর চা মজদুর জনসভায়: ছবিঃ বিনোদ দাস।

নীতেশ বর্মণ
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৮
Share: Save:

বিজেপির চা মজদুর জনসভায় চা বাগান শ্রমিকদের একটা বড় অংশের অনুপস্থিতি ঘিরে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে। রবিবার শিলিগুড়ির দাগাপুরের সেই জনসভায় আদিবাসীদের একাংশ যাননি বলেই জানা গিয়েছে। মঞ্চের শেষ বক্তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি যখন বক্তব্য রাখছিলেন, তখনও জনসভার মাঠ প্রায় ফাঁকাই ছিল। জনসভায় ২০ হাজার লোক আনার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এ দিন পাঁচ হাজার লোকও ছিলেন কি না প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরেই।

দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, জনসভায় সামনের দিকে যাঁরা বসেছিলেন তাঁদের একটা অংশ চা বাগান শ্রমিকই নন। প্রত্যেক বাগান থেকে গাড়িতে যে শ্রমিক আনার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল, কোনও জেলা থেকেই তা আনতে পারেননি নেতারা। বিশেষ করে, আলিপুরদুয়ার থেকে সে ভাবে লোকজন যায়নি। পাহাড় থেকেও উপস্থিতির হার কম ছিল বলে দাবি।

গ্রাম পঞ্চায়েতের পরে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনেও আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি। আদিবাসী ভোটের একটা বড় অংশ বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশই মানছেন। উত্তরবঙ্গের চা অধ্যুষিত দলের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিং সাংগঠনিক জেলার আদিবাসী ভোটের কথা মাথায় রেখে ‘ট্রেড ইউনিয়ন রিলেশন সেল’ তৈরি করে সংগঠনের তরফে প্রথম জনসভা হল এ দিন। সূত্রের খবর, সেখানেই সংগঠনের এমন হাল দেখে মঞ্চেই রাজ্য নেতৃত্বের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সভার আয়োজনের দায়িত্বে থাকা এক সাংসদ এবং জেলা নেতৃত্বকে।

বিজেপির এই জনসভাকে সমর্থন জানায়নি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের মজদুর সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। সঙ্ঘের নেতাদের পরামর্শ না নিয়েই জনসভা করার অভিযোগও উঠেছে স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ট্রেড ইউনিয়নগুলির মধ্যে অন্যতম ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। তার নেতা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা এবং সংগঠনের নেতা যুগলকিশোর ঝায়ের মধ্যে কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাও এই জনসভাকে কার্যত ‘বয়কট’ করেছিলেন। ময়নাগুড়ির বিজেপি বিধায়ক কৌশিক রায় এবং বিজেপির জোটসঙ্গী জিএনএলএফের বিধায়ক নীরজ জিম্বাকেও জনসভায় দেখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও আসেননি। সুকান্ত-ঘনিষ্ঠদের সক্রিয়তার অভিযোগে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠেরা জনসভার তদারকি থেকে সরে গিয়েছেন বলেও খবর। যে আদিবাসী সংগঠনকে ফেরাতে নতুন করে ‘রিলেশন সেল’ তৈরি করে বাগানের সংগঠনকে মজবুত করতে চাইছে দল তার প্রথম জনসভাতেই এমন কোন্দলে দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

যদিও স্মৃতি ইরানির বক্তব্য, ‘‘চা বাগান শ্রমিকদেরও নানা ভাবে বঞ্চিত করছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি, পাট্টা, পিএফের বিষয়েও আশ্বাস ছাড়া রাজ্যের শাসক দলের কিছুই করেনি।’’ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘আদিবাসী ভোট বিজেপির সঙ্গেই রয়েছে।’’

রাজ্যে তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘চা শ্রমিকদের উন্নয়ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মাধ্যমেই হচ্ছে। বিজেপি অনেক আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিজেপির এই মিথ্যে আশ্বাসে মানুষ আর কান দিচ্ছেন না। সেজন্য চা শ্রমিকেরা বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। আগামী দিনেও বিজেপির সভায় লোক হবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Smriti Irani Siliguri BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy