Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Kolkata Doctor Rape and Murder

বার বার ইস্তফার ইচ্ছা সুপারের, ‘চাপের প্রভাব’ সন্দেহ সহকর্মীদের 

সম্প্রতি প্রিয়ঙ্কর ‘অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর’ থেকে ‘প্রফেসর’ হয়েছেন। ওই পদোন্নতি পাওয়ার পরেও ফের তিনি ইস্তফাপত্র পাঠান বলে মেডিক্যাল সূত্রের দাবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

গৌর আচার্য 
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৩১
Share: Save:

বেশ কয়েক বার ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরে। কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল সূত্রে খবর, কোনও ‘চাপে’ পড়ে কি তবে বার বার ইস্তফা দিতে চেয়েছেন মেডিক্যালের সুপার তথা সহকারী অধ্যক্ষ প্রিয়ঙ্কর রায়? তিনি নিজে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। কিন্তু তাঁর সহকর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁর উপরে ‘চাপ’ রয়েছে।

সম্প্রতি প্রিয়ঙ্কর ‘অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর’ থেকে ‘প্রফেসর’ হয়েছেন। ওই পদোন্নতি পাওয়ার পরেও ফের তিনি ইস্তফাপত্র পাঠান বলে মেডিক্যাল সূত্রের দাবি। দিন কয়েক আগে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ‘শাসানি ও হুমকির’ সংস্কৃতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রিয়ঙ্করের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশের কথা সামনে আসতেই শোরগোল পড়েছে। হাসপাতাল পরিচালনা করতে গিয়ে তাঁকেও দীর্ঘদিন ধরে মেডিক্যালের অন্দরে ও বাইরে চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে মেডিক্যাল সূত্রের দাবি। মেডিক্যালের এক আধিকারিক দাবি করেন, “কয়েক মাস আগে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে মেডিক্যালের বাইরের কিছু প্রভাবশালীদের চাপ এতটাই ছিল, যে প্রিয়ঙ্করবাবু এক প্রকার বাধ্য হয়ে সুপারের পদ থেকে ইস্তফাপত্র পাঠাতে বাধ্য হন।” এ বিষয়ে প্রিয়ঙ্কর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকারি নির্দেশ ও আইন মেনেই আমি মেডিক্যালে প্রশাসনিক কাজকর্ম ও চিকিৎসা পরিষেবার কাজ পরিচালনা করি।’’

মেডিক্যালের অধ্যক্ষ কৌশিক সমাজদারের দাবি, ‘‘প্রিয়ঙ্কর মাস দু’য়েক আগে এমবিবিএস পড়ুয়াদের পড়ানোর জন্য সুপারের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে আমাকে ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে ইস্তফাপত্র পাঠান। ওঁকে আপাতত ওই পদেই কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’’ মেডিক্যাল সূত্রের দাবি, শেষ বার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ স্তরের এক আধিকারিক তাঁকে ফোন করে বুঝিয়ে সুপারের পদে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

মেডিক্যালের কর্তাদের একাংশের দাবি, মেডিক্যালে বিভিন্ন বিভাগে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে অনেক বিভাগও এখনও চালু হয়নি। সার্বিক চিকিৎসা পরিকাঠামোরও অভাব রয়েছে। মেডিক্যালে অনেকেই তাঁদের সরকারি কর্তব্য ঠিক মতো পালন করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। মেডিক্যালের চিকিৎসক-শিক্ষক বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরিকাঠামোর অভাবে মেডিক্যালের সার্বিক চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে প্রিয়ঙ্করবাবুকে দীর্ঘদিন ধরে মেডিক্যালের অন্দরে ও বাইরে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। অতীতে বাইরের একাধিক প্রভাবশালী ও তাঁদের অনুগামীরা মেডিক্যালে রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রিয়ঙ্করবাবুর উপরে ক্রমাগত চাপসৃষ্টি করেছেন। সিসিইউতে শয্যা না থাকলেও, প্রভাবশালীরা প্রিয়ঙ্করবাবুর উপরে সেখানে রোগীদের ভর্তি করার জন্য প্রবল চাপ সৃষ্টি করেন। এ সব কারণেই মনে হয়, তিনি সুপারের পদ ছাড়তে আগ্রহী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Protest Raiganj Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE