আবাস যোজনার ঘর বিলি নিয়ে সোমবার সকাল থেকে জলপাইগুড়িতে অবরোধ-বিক্ষোভ হয়েছে। যাত্রীরা দুর্ভোগে। ছবি: সন্দীপ পাল
দৃশ্য-১: কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। তৃণমূলের পতাকা হাতে এক দল মহিলা। তাঁরা গ্রামসম্পদ কর্মী তথা ‘ভিআরপি’-র বাড়ি ঘেরাও করেছেন। তৃণমূলের পতাকা হাতে তাঁদের অভিযোগের নিশানা তৃণমূলেরই পঞ্চায়েতের দিকে। তাঁদের অভিযোগ, ভাঙাচোরা টিন-দরমার বাড়িতে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর পাননি, কয়েক জনের নাম থাকলেও কেটে দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরের জমিদার পাড়ায় ভিআরপি বেবি ঘোষের বাড়ি ঘিরে এই বিক্ষোভ চলল ঘণ্টা দু’য়েক। ভিআরপি-রা আবাস যোজনার সমীক্ষা করেছেন। বেবি ঘোষ বললেন, ‘‘যাঁদের পাকা বাড়ি, সমীক্ষার সময় তাঁদের নাম কাটা গিয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, যাঁর নাম কেটেছি, তাঁকে ঘর দেওয়া হচ্ছে আর যাঁর কাঁচা বাড়ি, তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না।’’
দৃশ্য-২: বালাপাড়ার গ্রামের রাস্তায় অবরোধ। অবরোধকারীদের অভিযোগ, তৃণমূলের বুথ সভাপতির পরিবারের সদস্যদের চারটি ঘরের বরাদ্দ এলেও, ছাপড়া ঘরের বাসিন্দাদের নাম তালিকায় নেই।
দৃশ্য-৩: পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কে দাঁড়িয়ে পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রিবাহী বাস, সেনা-বোঝাই ট্রাক। শ’খানেক মানুষের অবরোধ চলছে। এঁদের বাড়ি সঞ্জয় নগর কলোনিতে। এঁদের অভিযোগ, কাঁচা বাড়িতে থাকলেও কেউ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি, কিন্তু পাকা বাড়ি থাকা লোকজনের ঘর মিলেছে।
আবাস যোজনার ঘর বিলি নিয়ে সোমবার সকাল থেকে জলপাইগুড়িতে এমনই অবরোধ-বিক্ষোভ হয়েছে। তৃণমূলের পতাকা নিয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে স্লোগানও উঠেছে। পাহাড়পুরের জমিদারপাড়ার বুথ সভাপতি শ্রীহরি মাতব্বরের তিন পূত্রবধূ এবং মেয়ের নামে সরকারি ঘর বরাদ্দ হয়েছে। শ্রীহরি নিজে টিনের বাড়িতে থাকেন বলে দাবি। যদিও সে বাড়ির পাশেই পেল্লায় পাকা বাড়ি। সেখানে তাঁর এক ছেলে থাকেন। এ দিন শ্রীহরি বলেন, ‘‘আমার তিন ছেলে আলাদা থাকে। এক ছেলের পাকাবাড়ি রয়েছে। ওর নাম কেটে দিতে বলেছি। আমি কারও নামই দিইনি। পঞ্চায়েত বলতে পারবে।’’ বিক্ষোভ চলাকালীন শ্রীহরি মাতব্বরের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর বিবাহিত মেয়ে। তিনি বলেন, ‘‘আমার নামেও ঘর এসেছে। কিন্তু আমার বরের পাকাবাড়ি রয়েছে। এখন আর ঘর চাই না।’’ পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেণুরঞ্জন সরকারের পূত্রবধূর নামেও সরকারি ঘর এসেছে। বেণুরঞ্জনের পাকা বাড়ি। তিনি বলেন, ‘‘ছেলের বৌয়ের নাম ছিল। কাটিয়ে দিয়েছি।’’ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তৃণমূলের উপপ্রধান বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতকে বিশ্বাস করেনি প্রশাসন। প্রশাসনের দোষেই অনেকে যোগ্য লোক ঘর থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’’ উপপ্রধানের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রশাসনিক আধিকারিকেরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রশাসনের দাবি, যা হয়েছে, রাজ্য সরকারের নির্দেশেই হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy