স্বচ্ছ: লকডাউনের জন্য চলছে না গাড়ি। যানজটও নেই। শিলিগুড়ি শহরজুড়েই কমেছে দূষণ। নিজস্ব চিত্র
গত দুই মাসে যেন অনেকটাই বদলে গিয়েছে শিলিগুড়ির পরিবেশ। আকাশ ঝকঝকে পরিস্কার। কোনও কোনও দিন খালি চোখেই দেখা মিলছে দূরে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার। বাতাসে ধোঁয়ার গন্ধ নেই। নদীর জলও অনেকটাই স্বচ্ছ। সকাল থেকেই শোনা যাচ্ছে নানা ধরনের পাখির ডাক। পরিবেশ দফতরও বলছে, দূষণ পরিমাপক যন্ত্রে যা মাপ দেখাচ্ছে তা গত তিন দশকেও দেখা যায়নি শিলিগুড়িতে। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৪০-৬৫ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। পরিবেশ দূষণের পরিভাষায় যা অত্যন্ত সন্তোষজনক।
সরকারি তথ্য বলছে, গত বছর দীপাবলির দু’দিন এই পরিমাপ ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। দেশের প্রথম ১০টি দূষিত শহরের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিল শিলিগুড়ি। বছরের অন্য সময় দূষণের মাত্রা কম থাকলেও ১৫০ উপরেই ঘোরাফেরা করে পরিসংখ্যান। কিন্তু মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে’র তৃতীয় সপ্তাহে শিলিগুড়ির বাতাসে দূষণের পরিমাণ অনেকটা কমে গিয়েছে।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক মুখপাত্র জানান, দেশের দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই বা মুম্বইয়ের মত শহরগুলিতে দূষণ কমার মাত্রায় রেকর্ড গড়েছে। সেই হিসাবে শিলিগুড়ির আকাশও পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। সোমবার শিলিগুড়ির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৪৫-৮০ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে।
পর্ষদের অফিসারদের একাংশ জানাচ্ছেন, পিএম ২.৫ বা পারটিকুলেট ম্যাটার এবং নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা কমবেশি ৬০-৭০ শতাংশ কমেছে। বাতাস বা কলকারখানার ধোঁয়া, দূষণ থেকেই এই মাত্রা বেড়ে থাকে। এখন গাড়ি চলাচল বন্ধ, ট্রেনের সংখ্যাও তলানিতে। তেমনিই, যানজট না থাকায় কমেছে বাতাসে ধূলিকণার পরিমান। সব মিলিয়ে গত তিন দশকের তুলনায় শিলিগুড়ি অনেকটাই স্বচ্ছ হয়ে উঠেছে।
পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানান, ‘‘আমাদের শহরে জনসংখ্যার সঙ্গে গাড়ির আনুপাতিক হার সবেচেয়ে বেশি। সমীক্ষায় রয়েছে, দেশের মধ্যে তা রেকর্ড হয়েছিল। লকডাউনের জেরে শিলিগুড়ি বদলে গিয়েছে। বাইরে বার হলে নিঃশ্বাস নিয়েই তা বোঝা যাচ্ছে। চোখ জ্বলছে না, নাকে ডিজেলের পোড়া তেলের গন্ধ আসছে না। পরিবেশের এই ভারসাম্য আর কতদিন থাকবে কে জানে!’’
লকডাউন খুলে স্বাভাবিক জীবন শুরু হবে। তাতে আবার এই পরিস্থিতি পাল্টাবে। সচেতন হলে শহরের দূষণের মাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে জানান তিনি।
বাতাসে দূষণ কমার সঙ্গে কমেছে মানুষের শ্বাসকষ্টজনিত রোগও। শহরের অন্যতম চিকিৎসক প্রেম দোরজি ভুটিয়া জানান, ‘‘এখন শিলিগুড়িতে বায়ু দূষণ নেই বললেই চলে। হাতেগোনা রোগীদের মধ্যে এখন দূষণের জেরে শ্বাসকষ্টের রোগ একেবারেই নেই। মানুষ মাস্ক ছাড়া বাইরে যাচ্ছে না। এই অভ্যাস আগামীতে থেকে গেলে শ্বাসকষ্ট বা সংক্রমণ অনেকটাই কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy