ফেরা: উত্তরবঙ্গ সফর সেরে বৃহস্পতিবার কলকাতার পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাগডোগরা বিমানবন্দরে। ছবি: স্বরূপ সরকার।
‘টাটাদের সিপিএম তাড়িয়েছে’ বলে বুধবার বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে করা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গে। এমনকি, বিরোধী হিসাবে বিজেপিকে গুরুত্ব না দিয়ে সিপিএমকে কেন তিনি ‘প্রাসঙ্গিক’ করে তুললেন তা নিয়েই আলোচনা চলছে উত্তরের সর্বত্র।
অনেকেরই বক্তব্য, আগামী বছরের মার্চে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেখানে রামের থেকে ভোট বামে এলে, আখেরে লাভ তৃণমূলের। তৃণমূল নেত্রী সে পথেই চলছেন। আর এক দল মনে করছে, সিপিএমকে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ‘প্রাসঙ্গিক’ করাটা মমতার একটি কৌশল। ‘দুর্নীতি’, সিবিআই, ইডির হাতে দলের বড় নেতাদের গ্রেফতার বা কোটি টাকার বিজয়া সম্মিলনী থেকে নজর ঘোরাতে এমন কৌশল বলেও বিরোধীদের একাংশ মনে করছেন।
যদিও সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘সিপিএম বিভিন্ন ভাবে তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তেমনই, মানুষের নজর হাজারো জ্বলন্ত বিষয় থেকে সরানোর জন্য এ সব মুখ্যমন্ত্রী করছেন। তবে বিজেপিকে নিয়ে বলার কিছু নেই!’’
মুখ্যমন্ত্রীর সিঙ্গুর নিয়ে বক্তব্যের বিরোধিতায় ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় সরব বহু বাম যুব নেতানেত্রীই। তৃণমূলের নেতাদের একাংশ মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে সরিয়ে সিপিএমকে সামনে আনতেই বাম নেতারাও দলের ‘মরা গাঙে জোয়ারের’ কিছুটা সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন। দার্জিলিং সিপিএমের জেলা সম্পাদক সমন পাঠক অবশ্য বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের ভয় পাচ্ছেন। তাই এ সব বলছেন। তবে সব কথা ধরে আন্দোলন করার কিছু নেই। মানুষই এর জবাব দেবেন।’’
দলীয় সূত্রের খবর, ২০১৯ সাল থেকে বামেদের ভোট বিজেপিতে যাওয়া শুরু করে। তাতে লোকসভায় খুব ভাল ফলও করে বিজেপি। উত্তরবঙ্গের আটটি আসনের মধ্যে সাতটিতে বিজেপি সাংসদেরা রয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সিপিএমের একটা বড় ভোট বিজেপির দিকে যায়। তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে তা স্পষ্ট হয়। তৃণমূল এখন মনে করেছে, বিজেপির থেকে সিপিএমে ভোট ফিরলে, তাদের সূবিধা। বিজেপি এবং বামেদের মধ্যে ভোট ভাগাভাগির ‘সুফল’ গত এক বছরে বিধানসভা ভোট, বিভিন্ন পুরভোটে শাসক দল পেয়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটেও তার প্রতিফলন ঘটেছে। বামেরা ভাল করা মানেই বিজেপির থেকে ভোট ফিরেছে। তাতে ত্রিস্তরে তৃণমূল বেড়েছে। পিছিয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাই মুখ্যমন্ত্রী আবার পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখেই সব করেছেন বলে গেরুয়া দলের নেতারাও মনে করছেন।
বিধায়ক তথা বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘বিজেপির গুরুত্ব কমেনি বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির গুরুত্বের দিকে নজর না দিয়ে নিজের গদি বাঁচান।’’ পক্ষান্তরে, শিলিগুড়ি সমতলের তৃণমূলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপিকে মানুষ গুরুত্ব দেন না। আমরাও গুরুত্ব দিতে চাই না। টাটাকে সিপিএম তাড়িয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy